1. ajkerfaridpur2020@gmail.com : Monirul Islam Titu : Monirul Islam Titu
  2. jmitsolution24@gmail.com : support :
  3. titunews@gmail.com : Monirul Islam Titu : Monirul Islam Titu
অবৈধ পথে ইউরোপ মরন যাত্রা : বৃহত্তর ফরিদপুরের ৮ জনের মৃত্যু - আজকের ফরিদপুর
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৪:৫০ পূর্বাহ্ন
নোটিশ বোর্ড :
আজকের ফরিদপুর নিউজ পোর্টালে আপনাদের স্বাগতম । করোনার এই মহামারীকালে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। সচেতনে সুস্থ থাকুন।
শিরোনাম :
আদালতের নির্দেশনার পর সালথা উপজেলা চেয়ারম্যান পদে দুই প্রার্থীকে প্রতিক বরাদ্দ কানাইপুরে খাদ্য পন্যের কারখানায় তৈরি হচ্ছিলো নকল স্যালাইন! সরকারি কাজে ই-স্বাক্ষর এর ব্যবহার বৃদ্ধির পরামর্শ জেলা প্রশাসকের জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহের উদ্বোধন দাবি বাস্তবায়নে আইডিইবি’র সংবাদ সম্মেলন বিদেশ প্রত্যাগত অভিবাসীদের নিয়ে কর্মশালা অনুষ্ঠিত প্রার্থীতা ফিরে পেলেন ওয়াদুদ মাতুব্বর কিশোর হত্যার দায়ে ইব্রাহিম মোল্লার ৮ বছরের কারাদন্ড পঞ্চপল্লি নিয়ে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দাখিল : উদঘাটন হয়নি আগুনের রহস্য সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত কলেজ ছাত্রী স্মরণে শোক যাত্রা ও মানববন্ধন

অবৈধ পথে ইউরোপ মরন যাত্রা : বৃহত্তর ফরিদপুরের ৮ জনের মৃত্যু

  • Update Time : শনিবার, ৪ মে, ২০২৪
  • ৫৪ জন পঠিত
অবৈধ পথে ইউরোপ মরন যাত্রা : বৃহত্তর ফরিদপুরের ৮ জনের মৃত্যু
অবৈধ পথে ইউরোপ মরন যাত্রা : বৃহত্তর ফরিদপুরের ৮ জনের মৃত্যু

স্টাফ রিপোর্টার : অবৈধ পথে ইউরোপে মরন যাত্রার মৃত্যুর মিছিল দিন দিন দীর্ঘ হচ্ছে। অল্প সময়ে বা অল্প দিনে বেশি টাকা কামাই করে বাড়ী গাড়ি করে সোনায় সোহাগা হওয়ার স্বপ্নে দেখেন বহু যুবক। গত দেড় বছরে বৃহওর ফরিদপুর জেলার কমপক্ষে দেড়শ, যুবকের সলিল সমাধি হয়েছে ভুমধ্যসাগরে। আদম পাচারকারী চক্রের খপ্পোরে পড়ে এই ৫ জেলার প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবার সর্বহারা হয়ে পড়ছেন। এই পরিবার গুলো সকলের সখের দুধের গাই, হালের বলদ, ফলজ গাছ, ঘর তোলার গাছ, ফসলি জমি।, মা- স্ত্রী – কন্যা সন্তানের সোনার গহনা বিক্রি করে সব টাকা তুলে দিচ্ছেন আদম পাচারকারী চক্রের অসাধু সদস্যদের হাতে।

দালালরা যাদের কাছ থেকে টাকা পয়সা নিচ্ছেন তাদের সাথে সুন্দর আচরণ করে হাতিয়ে নেন প্রায় ৮/৯ লাখ করে টাকা। এর মধ্যে মালয়েশিয়া, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ডুবাই, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, এসব অঞ্চলে পাঠানোর জন্য ই বেশি লোক ঝুঁকে পড়ে আদম ব্যবসায়ীদের দিকে। আদম পাচারকারীরা, তিন কিস্তিতে টাকা নেন বলে ভুক্তভোগীরা জানান। এর মধ্যে পাসপোর্ট করার পর। মেডিকেল রিপোর্ট করার পর। ভুয়া ভিসা দেখিয়ে একবার। অথবা তিনমাসের টুরিস্ট ভিসা দেখিয়ে সর্বশান্ত করে ফেলেন শত শত অসহায় অভাবী মানুষকে। উরন্ত এই ভুক্তভোগী পরিবার গুলো থানায় বা কোর্টে মামলা করলে উল্টো দালালদের পক্ষ নেওয়া থানা পুলিশের অত্যাচারে বাড়ী ঘুমাতে পারে না স্বজনহারা। এমন বিস্তার অভিযোগ উঠছে।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গত ২০২৩ সালে ৯ মার্চ ফরিদপুর নগরকান্দা উপজেলার তালমা ইউনিয়নের কৃষ্ণ নগরের গ্রামের ৪৮ যুবেকর মধ্যে ইতালি যাওয়ার পথে ৩৮ জনের সলিলসমাধি হয়। এ ঘটনায় নিহত আলামিনের মা মোসাঃ চামেলি বেগম নগরকান্দা থানায় আদমবেপারি মোঃ মুরাদ বেপারী সহ ১০ জনের নামে মামলা করেন, যার মামলা নং ৭ নগরকান্দা জিআর ১৫৩/২৩, এ ছাড়া ও একই এলাকার নিহত মোঃ মাহফুজের মা- মাফুজা বেগম বাদী হয়ে মুরাদ বেপারসহ ১০ জনের নামে মামলা করেন মামলা নং১২ নগরকান্দা জিআর ৬২/২০২২।

অপরদিকে ২০২৪ সালে সালথা উপজেলা সদরে ৩৫ জন যুবক নিখোঁজ রয়েছে বিগত ১৬ মাস। এখনও তাদের বাড়ীতে চলছে স্বজন হারানোর কান্নার রোল। বৃদ্ধ বাবা- মা,স্ত্রী সন্তান এবং বিবাহ যোগ্য মেয়েরা এখন পিতার জন্য অপেক্ষা করে বসে কাঁদছে। সর্বশেষ, গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুর জেলার রাজৈর ও মুকসুদপুর উপজেলার ৮ জন যুবক তিউনিসিয়ার ভুমধ্য সাগর পারি দেওয়ার সময় – আগুনে পুড়ে নিহত হন। উল্লেখ্য ওই নৌকায় প্রায় ৫২ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ছিলেন। তারা ভূমধ্যসাগর হয়ে ইউরোপে যাবার পথে এ ঘটনা ঘটে। ঐ ৫২ জনের মধ্যে ৮ জনই বাংলাদেশী যুবক। জানাযায়, ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ যাওয়ার চেষ্টাকালে তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকাডুবিতে নিহত আট বাংলাদেশির মরদেহ বাংলাদেশ বিমানবন্দরে এসে পৌঁছেছে।

শুক্রবার (৩ মে) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাদের লাশের ময়না তদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে বলে জানাগেল। বৃহস্পতিবার (২ মে) দুপুর সাড়ে ১২টায় আট বাংলাদেশির মরদেহ এসভি ৮০৮ বিমানযোগে ঢাকার হযরত শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়।এর আগে, মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) লিবিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল অব. আবুল হাসনাত মুহাম্মাদ খায়রুল বাশারের (তিউনিসিয়ার অনাবাসিক রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত) উপস্থিতিতে মিশনের কর্মকর্তারা মরদেহগুলো তিউনিস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করেন।

নিহত আট বাংলাদেশি হলেন, মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কদমবাড়ির নয়ন বিশ্বাস(৩৫) একই উপজেলার খালিয়ার মামুন শেখ (২৮) ও সজল(৩০), একই উপজেলার বাজিতপুর নতুনবাজারের কাজি সজীব (৪০)ও কবিরাজপুরের কায়সার(৩৪) গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার রাগদীর রিফাত(৩৪) দিগনগরের রাসেল(৩৩) এবং গঙ্গারামপুর গোহালার ইমরুল কায়েস(২৭) ওরফে আপন। প্রসঙ্গত, গত ১৫ ফেব্রæয়ারি নৌকায় অগ্নিকান্ডে অন্তত ৯ জন নিহত হন। নিহত অন্য একজন পাকিস্তানের নাগরিক। তার নাম পাওয়া যায়নি।

ওই নৌকায় প্রায় ৫২ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ছিলেন। তারা ভূমধ্যসাগর হয়ে ইউরোপে যাচ্ছিলেন। সমুদ্রপথে ইতালি যাওয়ার সময় ভূ-মধ্যসাগরের তিউনিসিয়ার উপকূলে নৌকাডুবিতে মৃত মাদারীপুরের পাঁচ যুবকসহ আটজনের মরদেহ দেশে আনা হয়েছে। এখন ঢাকা থেকে মরদেহগুলো বাড়িতে নেওয়ার অপেক্ষায় আছেন স্বজনরা। কিন্তু ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহগুলো পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে। ফলে স্বজনদের শেষ দেখা পেতে অপেক্ষা করতে হচ্ছে আরও একদিন। শুক্রবার সকালে ময়নাতদন্তের পর পরিবারের কাছে মরদেহ বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে মৃত আটজনের মধ্যে পাঁচজনই মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার বাসিন্দা। অন্যরা পার্শ্ববর্তী গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের বাসিন্দা। নিহতরা হলেন- মাদারীপুর জেলার রাজৈর উপজেলার কোদালিয়া গ্রামের মিজানুর রহমান কাজীর ছেলে সজীব কাজী (১৯), পশ্চিম স্বরমঙ্গল গ্রামের ইউসুফ আলী শেখের ছেলে মামুন শেখ (২২), সেনদিয়ার গ্রামের সুনীল বৈরাগীর ছেলে সজল বৈরাগী (২২), উত্তরপাড়ার পরিতোষ বিশ্বাসের ছেলে নয়ন বিশ্বাস (২৪), কেশরদিয়া গ্রামের কাওসার (২২), গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বড়দিয়া গ্রামের দাদন মিয়ার ছেলে রিফাদ (২১), ফতেয়পট্টি এলাকার মো. রাসেল (২০) ও গয়লাকান্দি গ্রামের পান্নু শেখের ছেলে ইসরুল কায়েস আপন (২২)।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ১৪ জানুয়ারি মাদারীপুর জেলার রাজৈর ও গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার বেশ কয়েকজন যুবক ইতালির উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হন। প্রথমে তারা প্লেনে করে লিবিয়া পৌঁছান। পরে গত ১৪ ফেব্রæয়ারি লিবিয়া থেকে দালালদের মাধ্যমে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ইতালির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন তারা। মাঝপথে তিউনিসিয়ার ভূ-মধ্যসাগরে নৌকার ইঞ্জিন ফেটে আগুন ধরে যায়। পরে ভূ-মধ্যসাগরেই ডুবে যায় নৌকাটি। এতে রাজৈরের কোদালিয়ার সজীব কাজী, পশ্চিম স্বরমঙ্গল গ্রামে মামুন শেখ, সেনদিয়ার সজল বৈরাগী, কদমবাড়ির নয়ন বিশ্বাস ও কেশরদিয়া গ্রামের কাওসার, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের রিফাদ, রাসেল ও আপনের মৃত্যু হয়।

এছাড়া এক পাকিস্তানী নাগরিকও মারা যান। খবর পেয়ে কয়েকজনকে জীবিত উদ্ধার করে স্থানীয় কোস্টগার্ড। স্বজনদের অভিযোগ, মানবপাচারকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের গজারিয়া গ্রামের রহিম শেখ ও সুন্দরদী গ্রামের বাদশা কাজীর ছেলে মোশারফ কাজী প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যেকের কাছ থেকে নেন ১০-১৫ লাখ টাকা। পরে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ইতালির উদ্দেশে রওনা করলে ঘটে এ দুর্ঘটনা। ঢাকা থেকে ফোনে নিহত মামুন শেখের বড় ভাই সজীব শেখ বলেন, আমার ভাইসহ আট যুবকের মরহেদ দেশে এসেছে।

এখন মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেলে নিয়েছে। একবার তিউনিসিয়ায় ময়নাতদন্ত হয়েছে, এরপরও আমাদের দেশে এটা করার প্রয়োজন ছিল না। বাড়িতে সবাই লাশের জন্য অপেক্ষা করছে, কখন যে যেতে পারব, বুঝতে পারছি না। নিহত সজীবের বাবা মিজানুর রহমান কাজী বলেন, ছেলে মারা গেছে ফেব্রæয়ারি মাসে এখন মে মাস। লাশ দেশে আনা হলো দেরি করে, তারপরও ভোগান্তি। কখন আমার ছেলের মুখটা দেখতে পাব, সবাই লাশের অপেক্ষা করছে। রাজৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান হাওলাদার বলেন, তিউনিসিয়ায় দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো আইনগত সহযোগিতা চাইলে করা হবে। এরই মধ্যে সরকারিভাবে মরদেহ দেশে আনা হয়েছে। পরিবারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দালালদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© পদ্মা বাংলা মিডিয়া হাউজের একটি প্রতিষ্ঠান
Design & Developed By JM IT SOLUTION