ফরিদপুর প্রতিনিধি :
ফরিদপুরে স্বাক্ষর জাল করে বিভিন্ন সনদ দেওয়ার অভিযোগ উঠছে ইউপি চেয়ারম্যানের ছেলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনাটি ঘটেছে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার তালমা ইউনিয়নে। ওই ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ারা বেগমের স্বাক্ষর জাল করে চেয়ারম্যানের নামে বিভিন্ন সনদ দিচ্ছেন তারই বড় ছেলে কামাল হোসেন মিয়া।
ফরিদপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ওই ইউনিয়নের শাকপালদিয়া গ্রামের বাসিন্দা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ খানের মেয়ে ফারজানা খানম। মঙ্গলবার ফরিদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। কামাল হোসের সনদ স্বাক্ষর করার একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে ইতিমধ্যে।
লিখিত বক্তব্যে তালমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ারা বেগমের ছেলে কামাল হোসেনকে ‘কুখ্যাত সন্ত্রাসী ও দাগি মাদক ব্যবসায়ী ডিজিটাল কামাল’ হিসেবে উল্লেখ করে ফারজানা খানম বলেন, তার মা দেলোয়ারা বেগম ইউপি চেয়ারম্যান হলেও কামাল হোসেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে নিজেকে দাবি করে আসছেন। নিজেই চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর করে ওয়ারিশ সনদ, জন্ম সনদ, নাগরিক সনদসহ বিভিন্নভাবে অবৈধভাবে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। অথচ কামাল ওই ইউনিয়নের একজন ইউপি সদস্যও নন।
লিখিত বক্তেব্যে বলা হয় অন্যের স্বাক্ষর নিজের নামে চালিয়ে দেওয়ার এ বিষয়টি ১৮৬০ সালের দন্ডবিধির বিভিন্ন ধারা ও দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৮ (গ) এর পরিপন্থী।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয় ঢাকার রামপুরায় থাকাকালে কামাল একাধিকবার অস্ত্র, ইয়াবা ও প্রতারণার কারণে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। তার বিরুদ্ধে এধরনের ১২টি মামলা রয়েছে। এছাড়া নগরকান্দা থানায় তার (কামাল) বিরুদ্ধে খুন, গুম, চাঁদাবাজী, লুট ও সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগ রয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, কামাল এবং তাঁর ছোট ভাই জামাল বাহিনীর হাতুরী পিটায় কোনাগ্রামে মো. সোবাহান নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে এবয় স্কুল ছাত্র অন্তর হত্যার পিছনে এ বাহিনীর মদদ রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত নুরজাহান বেগম (৭০) নামে এক নারী জানান, তাকে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রæত ঘর পাইয়ে দেয়ার কথা বলে তার দুই ছেলের নিকট হতে ত্রিশ হাজার টাকা নেয় কামাল। উপস্থিত নিহত অন্তরের মা জান্নাতি বেগম জানান, এই জামাল ও কামাল হোসেন এলাকায় নিজস্ব বাহিনী পোষেন। তারা ইতিপূর্বে তার ছেলে অন্তরকে অপহরণ করে হত্যা করে। এছাড়াও আরো নানাবিধ অপরাধের সাথে তারা জড়িত।
ওই সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ফারজানা খানমের বাবা তালমা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ খান উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগের ব্যাপারে কামাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, জামাল-কামাল বাহিনী নামে কোন বাহিনী আমাদের নেই। তিনি বলেন, কোন হত্যাকান্ডের সাথে আমি বা আমাদের লোক জড়িত নয়। অন্তর হত্যা মামলার চার্জশীট হয়েছে সেটি এখন বিচারিক পর্যায়ে রয়েছে। আসামির তালিকায় আমাদের কোন সমর্থকের নাম পর্যন্ত নেই। তিনি বলেন, বিএনপির সময়কালে তার নামে বেশ কিছু হয়রানীমূলক মামলা হয়েছিল রামপুরা থানায়, সেগুলি সব নিষ্পত্তি হয়ে গেছে।
ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ারা বেগম জানান, আমি চেয়ারম্যান, আমি নিয়মিত ইউনিয়ন পরিষদে যাই। আমার সই আমি নিজে করি। আমার ছেলে কামাল হোসেন মিয়া আগামী নির্বাচনে দাঁড়াবে। এ কারনে তার চরিত্র হননের চেষ্টা চলছে।#
Leave a Reply