স্টাফ রিপোর্টার : রাজবাড়ি থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী ‘চন্দনা/ভাঙ্গা কমিউটার ট্রেন’ ফরিদপুুর রেলস্টেশনে স্টপেজ দাবিতে রেলগাড়ি অবরোধ করে আবারো মানববন্ধন হয়েছে। গতকাল শনিবার (১১ মে) ভোরে ফরিদপুর রেলস্টেশনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এসময় আন্দোলনকারীরা কাফনের কাপড় শরীরে জড়িয়ে তারা রেললাইনের উপর শুয়ে পড়ে ট্রেন অবরোধ করে। পরে পাকশীর উর্ধতন রেল কর্মকর্তাদের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে লিখিত আবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেয়া হয়। এরপর ৪৮ ঘন্টার মধ্যে দাবি পূরণ না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য রেল অবরোধের ঘোষণা দিয়ে অবরোধ তুলে নেন তারা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার ভোর সোয়া পাঁচটা হতে এ দাবিতে সমবেত হন স্থানীয়রা। ভোর ৫টা ৩৮ মিনিটে ট্রেনটি ফরিদপুর অতিক্রম করার আগে তারা কাফনের কাপড় শরীরে জড়িয়ে রেলপথের উপর শুয়ে পরেন। এসময় চন্দনা কমিউটার ট্রেনের স্টপেজ দাবিতে নানা ¯েøাগান দিতে থাকেন। এসময় সেখানে বক্তব্য দেন অধ্যাপক আলতাফ হোসেন, আবরার নাদিম, শরীফ খান, রুমন চৌধুরী, তুহিন বিন আলমগীর প্রমুখ। বক্তাগণ ফরিদপুরে চন্দনা কমিউটার ট্রেনের স্টপেজ দাবি করে বলেন, গত ৫ মে একই দাবিতে মানববন্ধনের পর আমরা জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি দিয়েছি। রেল কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি সম্বলিত আবেদনও পাঠানো হয়েছে ই-মেইলে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাতে কর্ণপাত করেননি। একারণে আবার আমরা আন্দোলনে নেমেছি।
অধ্যাপক আলতাফ হোসেন বলেন, আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাই। তারা জানিয়ে দিক ফরিদপুরকে তারা উপেক্ষা করে আমরা মেনে নেবো। ফরিদপুর জেলা না, আমরা মেনে নেবো। ফরিদপুর একটি অশিক্ষিত শহর, আমরা মেনে নেবো। ফরিদপুরে এই ট্রেন থামালে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, আমরা মেনে নেবো। কিন্তু তা যদি না হয় তাহলে আমাদের এখানে এই ট্রেনের থামার সুযোগ করে দিতে হবে। এসময় রেল আন্দোলন কর্মীদের দাবির মুখে ফরিদপুর রেলস্টেশন মাস্টার তাকদির হোসেন রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনোয়ার সুমনের সাথে আন্দোলনকারীদের মুঠোফোনে কথা বলিয়ে দেন। বিভাগীয় রেলওয়ে কর্মকর্তা আনোয়ার সুমন আন্দোলনকারীদের এব্যাপারে একটি লিখিত আবেদন পাঠাতে বলেছেন।
আন্দোলনকারীরা জানান, এরআগেও তারা একবার তাদের দাবি সম্বলিত একটি আবেদন ইমেইলে পাকশী বিভাগীয় দপ্তরে পাঠিয়েছে। যদি ৪৮ ঘন্টার মধ্যে তাদের দাবি না মানা হয় তাহলে তারা লাগাতার অবরোধ কর্মসূচিতে যাবেন। ফরিদপুরের সকল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এরপর প্রায় পৌনে এক ঘন্টা অবরুদ্ধ থাকার পরে আন্দোলনকারীরা রেলপথ থেকে সরে দাড়ালে ট্রেনটি ভাঙ্গা স্টেশনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। প্রসঙ্গত, গত ৫ মে থেকে রাজবাড়ী থেকে ভাঙ্গা হয়ে রাজধানী ঢাকার সাথে বাণিজ্যিকভাবে চন্দনা কমিউটার ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
তবে মাঝপথে ফরিদপুর রেলস্টেশনে কোন যাত্রাবিরতি না থাকায় এ নিয়ে ফরিদপুরের রেলযাত্রীদের মাঝে চরম অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। প্রথমদিনে ফরিদপুরে স্টপেজ দাবিতে মানববন্ধন করে তারা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য রেলমন্ত্রী সহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান। গত ৬ মে ট্রেনটি ফরিদপুরের স্টপেজ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে ফরিদপুর সদর সদরের সংসদ সদস্য একে আজাদ রেলমন্ত্রী জিল্লুর হাকিমকে একটি অনুরোধপত্র দিয়েছেন।
ফরিদপুরের রেল স্টেশন মাস্টার তাকদির হোসেন বলেন আজ (গতকাল) সকাল ৫.৩৮ থেকে ৬.২৫ মিনিট পর্যন্ত চন্দনা কমেডি ট্রেন ফরিদপুর রেল স্টেশনের অদূরে অবরুদ্ধ হয়েছিল। তিনি বলেন আমি আন্দোলনকারীদের সাথে রেলের উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলিয়ে দিয়েছি। তাকদির হোসেন আরো বলেন,ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল আহসান তালুকদার আগামীকাল (আজ) রোববার তাকে ডেকেছেন। তিনি জেলা প্রশাসনের কাছে সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরবেন। তিনি বলেন আশা করা যায় আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
Leave a Reply