ভাঙ্গা প্রতিনিধি :
আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদের গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরের ভাঙ্গার নূরপুরের বাড়ির পাশের মহাসড়কের সাইনবোর্ড ভেঙে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা।
সাইনবোর্ডটিতে “তারেক মাসুদের বাড়ি” সম্বলিত লেখা ছিল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) তালাত মাহমুদ শাহানশাহ ও ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়ারুল ইসলাম।
মঙ্গলবার তারেক মাসুদের ভাই বাবু মাসুদ এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
বাবু মাসুদ বলেন, “সোমবার হঠাৎ দেখি ভাঙ্গার নূরপুর বাড়ির পাশের ঢাকা-গোপালগঞ্জ মহাসড়কে “তারেক মাসুদের বাড়ি” সম্বলিত লেখা সাইনবোর্ডটি উপড়ে ফেলা হয়েছে। কে-বা কাহারা যেন শত্রুতা করে সাইনবোর্ডটি উপড়ে ফেলেছে।”
তিনি বলেন, “আমাদের এ বাড়িটি নিয়ে বেশ ষড়যন্ত্র চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান চলচ্চিত্রকারের বাড়িটিও এখন নিরাপদ মনে হচ্ছে না। প্রশাসন ও সরকারের কাছে এ ঘটনার সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি, একই সাথে বাড়িটি দ্রুত সংরক্ষণে ও নিরাপত্তা দিতে সরকারের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি।”
এ ব্যাপারে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়ারুল ইসলাম বলেন, মৌখিকভাবে বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। এব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে ভাঙ্গা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাসুদুর রহমান বলেন, তারেক মাসুদ আমাদের দেশের সম্পদ। তার নাম ও বাড়ির নাম লেখা সম্বলিত সাইনবোর্ড ভেঙে কিংবা উপড়ে ফেলা বড় দুঃখজনক। এব্যাপারে দ্রুত খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, অকাল প্রয়াত আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ ১৯৫৬ সালের ৬ ডিসেম্বর ফরিদপুরের ভাঙ্গার নূরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে ভর্তি হওয়ার পরই তিনি চলচ্চিত্র আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। দেশে তিনিই প্রথম স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র আন্দোলনের সূচনা করেন। ২০১১ সালের ১৩ আগস্ট মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার জোকা নামক স্থানে বিপরীতমুখী ‘চুয়াডাঙ্গা এক্সপ্রেসের একটি বাসের সঙ্গে তারেক মাসুদ ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মিশুক মুনীরকে বহনকারী মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন। ঘটনার সময় তারা ‘কাগজের ফুল’-এর শুটিং লোকেশন দেখে ঢাকায় ফিরছিলেন। ‘মুক্তির গান’, ‘মাটির ময়না’, ‘আদম সুরত’, ‘রানওয়ে’সহ বেশ কিছু সাড়া জাগানো চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন তারেক মাসুদ।
তারেক মাসুদ ভাঙ্গার নূরপুর গ্রামের মসিউর রহমান মাসুদ-নূরুন্নাহার দম্পতির ছেলে। তার বাবা ভাঙ্গা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে তিনিই (তারেক) সবার বড়। #
Leave a Reply