সবুজ দাস, ফরিদপুর : ফরিদপুর শহরের পুরাতন বাস স্ট্যান্ড পিয়ারলেস (প্রাঃ) হাসপাতাল এ্যান্ড ডায়গনস্টিক সেন্টারে বিক্রয় নিষিদ্ধ সরকারি ঔষধ পাওয়ায় হাসপাতাল মালিক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসাদুজ্জামান (আসাদ) কে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এর আগেও নানা অনিয়মের অভিযোগে একাধীক বার হাসপাতালটিকে জরিমানা সহ প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছিল। তবে কোন এক অদৃশ্য শক্তির হস্তক্ষেপেই প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম পুনরায় চালু করা হয়েছে বলে মনে করছে ফরিদপুরের সচেতন মহল। তবে এবার ঐ প্রতিষ্ঠানে সরকারি সিলযুক্ত ঔষধ স্টোর রুমে সংরক্ষন করে চড়া দামে রোগীদের কাছে বিক্রি করার অপরাধে পুনরায় হাসপাতালটিকে জরিমানা করেছে জেলা ভোক্তা অধিদপ্তর।
এ বিষয়ে ফরিদপুর জেলা ভোক্তা অধিদপ্তর এর সহকারি পরিচালক সোহেল শেখ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দীর্ঘদিন ধরে সরকারি হাসপাতাল থেকে সরকারি ঔষধ গোপনে সংগ্রহ করে হাসপাতাল মালিক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসাদুজ্জামান (আসাদ) হাসপাতালে এনে রোগীদের কাছে চড়া দামে বিক্রি করতেন। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে (১০ নভেম্বর) বৃহস্পতিবার সকাল ১০ থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত পিয়ারলেস (প্রাঃ) হাসপাতাল এ্যান্ড ডায়গনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালানো হয়। এ সময় বিক্রয় নিষিদ্ধ সরকারি ঔষধ হাসপাতালের পিছনে স্টোর রুম এবং দ্বিতীয় তালায় একটি থাকার রুম থেকে তল্লাশি চালিয়ে সরকারি ইনজেকশনসহ ৪ প্রকার ঔষধ উদ্ধার করা হয়।
পরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে ঔষধগুলোকে জব্দ করে মামলার আলামত হিসাবে রাখা হয়েছে। এসময় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ ধারায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অভিযান কালে সিভিল সার্জন অফিসের খাদ্য পরিদর্শক মোঃ বজলুর রশিদ খান, ওষুধ প্রশাসনের অফিস সহকারী শরিফ সাহেদ আররফসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী উপস্থিত ছিলেন। এর আগে ঐ হাসপাতালে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসা স্বরুপ সিজারের বাচ্চার কপাল কাটা, এক রোগীর মল দ্বারের নারী কর্তনসহ নানা অভিযোগ উঠেছিলো। এ সব অনিয়মে কারনে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম বন্ধ ঘোষনা করেছিলো প্রশাসন।
সর্বশেষ সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভোক্তা অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. সোহেল শেখ টেস্টের আগে রিপোর্টে চিকিৎসকের স্বাক্ষর রাখা, মেয়াদোত্তীর্ণ রিএজেন্ট ব্যবহার, টেস্টে বেশি টাকা আদায়সহ নানা অনিয়মের কারণে ফরিদপুরে পিয়ারলেস প্রাইভেট হাসপাতাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেছে। তবে এবার ঐ হাসপাতালে সরকারি ঔষধ সংরক্ষন করায় পুনরায় জরিমানা করা হলেও এসব সরকারি সিল যুক্ত ঔষধগুলো কোন সংস্থা থেকে আসলো তা নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে ফরিদপুরের সচেতন মহলের মাঝে।
কোন এক সরকারি হাসপাতালের দায়িত্বশীল কর্মকর্তার হাত দিয়েই এ সব ঔষধ হাসপাতালটিতে ঢুকছে বলে মনে করছে তারা। ঐ দায়িত্বশীল কর্মকর্তাগন কি এই ঔষধ গুলি পিয়ারলেস হাসাপাতলেই দিয়েছেন নাকি আরো কোন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দিয়েছে এসব নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। তবে তাৎক্ষনিক ভাবে এসব প্রশ্ন নিয়ে অভিযানে অংশগ্রহন কারিদের প্রশ্ন করলে, পরবর্তিতে তারা এ সব বিষয়ে ক্ষতিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছিলেন। অভিযানকালে হাসপাতালের মালিক আছাদ পলাতক থাকায় তাৎক্ষনিক ভাবে তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
সরকারি ওষুধ বেসরকারি হাসপাতালে কিভাবে!
Leave a Reply