1. ajkerfaridpur2020@gmail.com : Monirul Islam Titu : Monirul Islam Titu
  2. jmitsolution24@gmail.com : support :
  3. titunews@gmail.com : Monirul Islam Titu : Monirul Islam Titu
রস সংগ্রহে ব্যাস্ত সময় পার
রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ০৫:০৬ পূর্বাহ্ন
নোটিশ বোর্ড :
আজকের ফরিদপুর নিউজ পোর্টালে আপনাদের স্বাগতম । করোনার এই মহামারীকালে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। সচেতনে সুস্থ থাকুন।

রস সংগ্রহে ব্যাস্ত সময় পার

  • Update Time : মঙ্গলবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২২
  • ৪২০ জন পঠিত
রস সংগ্রহে ব্যাস্ত সময় পার
রস সংগ্রহে ব্যাস্ত সময় পার

মনির মোল্যা, সালথা : রাতের কুয়াচ্ছন্ন আকাশ আর ঠান্ডা আভাস নিয়ে এসেছে প্রকৃতিতে শীতের বার্তা। শীতের সকাল মানেই যেন অদ্ভূত এক আলসেমি। আরাম দায়ক বিছানা বা কাথার উঞ্চতা কিছুতেই ছাড়তে চায় না মন। তবুও কুয়াশার চাদর সরিয়ে উকি দেয় মিষ্টি রসের লোভ। এক গ্লাস টাটকা রসে জমে ওঠে যেন শীতের আমেজ। শীতের হিম জড়ানো ভোরে খেজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন ফরিদপুরের সালথা উপজেলার গাছিরা। গুড় তৈরিতে গাছিদের ব্যস্ততায় গল্পেরও রঙ্ বদলায়। কুয়াশা মাখা ভোরে রস আহরণে নিয়মিত ছুটে চলেন গাছিরা।

সরেজমিনে গেলে সালথা উপজেলার যদুনন্দী গ্রামের সড়কের দুইপাশে দুপুর টার দিকে বয়স্ক ও অর্ধবয়স্ক গাছিরা খেজুর গাছকাটা ছ্যান নিয়ে ও কোমরের সাথে গাছে দড়ি বেঁধে নিপুণ হাতে গাছ চাঁচা-ছোলার কাজ শুরু করতে দেখা যায়। গাছ চাচা শেষে বাঁশের নলি লাগিয়ে রস আহরণের জন্য মাটির হাড়ি পাতা হয়। পরের দিন কুয়াশার ভোরে গাছ থেকে রসের হাড়ি নামিয়ে বাড়িতে নিয়ে যায় গাছিরা। এসময় আবার অনেকেই টাটকা রস খাওয়ার জন্য খেজুর গাছের তলা থেকে রস কিনে নেয়। এলাকাবাসী জানান, শীত মৌসুম এলেই এ উজেলায় সর্বত্র শীত উদযাপনের নতুন আয়োজন শুরু হয়। খেজুরের রস আহরণ ও গুড় তৈরি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন এ এলাকার গাছিরা।

শীতের দিন মানেই খেজুর রস ও পাটালী গুড়ের মৌ-মৌ গন্ধ। খেজুর গুড় বাঙালির সংস্কৃতির একটা অঙ্গ। খেজুরের গুড় ছাড়া আমাদের শীতকালীন উৎসব ভাবাই যায় না। খেজুরের গুড় দিয়ে পিঠা-পায়েসসহ নানা ধরনের মিষ্টান্ন তৈরি করা হয়। এই শীতের দিনে মেয়ে-জামাইদের শীতের পিঠা খাওয়ানো হয় এই খেজুরের রস ও গুড় দিয়ে। খেজুরের রসে জামাই আদরের প্রথা এই অঞ্চলে প্রাচীনকাল থেকেই আসছে। খেজুর গাছের তুলনায় গাছির অভাব রয়েছে। এছাড়াও বেশী লাভের আশায় অসাধু গুড় ব্যবসায়ী কৃত্রিম গুড় তৈরী করে ক্রেতা সাধারনের সাথে প্রতারনা করেন। নিজেরা লাভবান হন প্রতারনা আর ভেজাল গুড়ে স্বাস্থ্য ঝুকিতে ফেলান। ভেজাল প্রতিরোধে প্রশাসনের নজরদারি করা উচিত বলে সাধারণ মানুষ দাবি করেছেন।

যদুনন্দী এলাকার ৭৫ বছর বয়সের গাছি জয়নাল শেখ ও ৭০ বছর বয়সের গাছি সিরাজুল খন্দকার জানান, গাছ থেকে রস সংগ্রহ শুরু হয়েছে। রস থেকে গুড় তৈরির পর্ব শুরু হয়ে শীতের চার মাস খেজুরের রস পাওয়া যাবে। সপ্তাহখানেক আগে থেকে বাজারগুলোতে উঠতে শুরু করেছে সুস্বাদু খেজুরের পাটালি ও গুড়। তাই অবহেলায় বেড়ে ওঠা খেজুরের গাছের কদর এখন অনেক বেশি থাকলেও গাছির সংখ্যা কম। ছলিট গুড় প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা বিক্রি করলে পরিশ্রম ওঠে।

আবার অনেকেই টাটকা রস খাওয়ার জন্য সকালে হাড়ি ভর্তি রস কিনে নিয়ে যায়। রস বিক্রি করার পর অবশিষ্ট যে রস থাকে তা দিয়ে গুড় তৈরি করে বাজারে বিক্রি করা হয়। সপ্তাহে সোম ও শুক্রবার এই এলাকার গাছিরা গুড় তৈরি করেন। তবে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা গুড়ের সাথে চিনি মিশিয়ে বাজারে কম দামে গুড় বিক্রি করায় আমাদের ছলিট গুড় কেউ নিতে চায় না। ভেজাল গুড় বিক্রি বন্ধ হলে গাছিরা লাভবান হতো।

সালথা উপজেলা কৃষি অফিসার জীবাংশু দাস জানান, উপজেলায় অনেক খেজুর গাছ আছে। এর মধ্যে যদুনন্দী, উজিরপুর-সাধুহাটি, খারদিয়া, আটঘর এলাকাতে বেশি সংখ্যক গাছ রয়েছে। অনেকে আগাম গাছ প্রস্তুত করায় বাজারে কিছু গুড়ও পাওয়া যাচ্ছে। গাছিরা খেজুর রস সংগ্রহ করে নলেন গুড় ও পাটালি গুড় তৈরি করে নিকটস্থ বাজারে বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হন। বর্তমানে খেজুর গুড়ের চাহিদা বেশী যার কারণে গাছিরা এদিকে যেমন লাভবান হচ্ছে ঠিক তেমনি আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল হচ্ছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© পদ্মা বাংলা মিডিয়া হাউজের একটি প্রতিষ্ঠান
Design & Developed By JM IT SOLUTION