স্টাফ রিপোর্টার : ফরিদপুরে মাদক মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে এক পুলিশ কর্মকর্তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড এবং পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। জরিমানা অনাদায়ে তাকে আরও তিন মাস করে বিনাশ্রম কারাদন্ড ভোগ করতে হবে। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক শিহাবুল ইসলাম এ আদেশ দেন। দন্ডপ্রাপ্ত ওই আসামির নাম শেখ আজম (৪০)। তিনি নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার পাঁচুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা।
তিনি ওই সময় ঝিনাদহ জেলা ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক (টিআই) পদে কর্মরত ছিলেন। ওই ঘটনার পর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে সংযুক্ত দেখানো হয় সিলেট রেঞ্জে। রায় ঘোষণার সময় পুলিশ কর্মকর্তা আদালতে হাজির ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাদের পুলিশ প্রহড়ায় জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। আদালত সুত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৬ ডিসেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঝিনাইদহ থেকে ফরিদপুরের দিকে আসা একটি মোটসাইকেল মধুখালী রেলগেটের পশ্চিম দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে রাস্তা পাড় হওয়ার সময় মজিবর মোল্লা (৫৫) নামে এক করাত কলের মিস্ত্রিকে চাপা দিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ে।
এ ঘটনায় মজিবর আহত হন। এলাকাবাসী মজিবরকে উদ্ধার করে মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। দুর্ঘটনার পর মোটরসাইকেল চালক মো. নূর আলম (৩৫) পালিয়ে যান। তবে আরোহী পুলিশ কর্মকর্তা শেখ আজম পালানোর চেষ্টা করলে জনতা তাকে আটক করে। পরে মধুখালী থানার পুলিশ এসে দুর্ঘটনা কবলিত মোটরসাইকেল তল্লাশী করে একটি বাক্স থেকে ৩৯ এবং তেলের ট্যাঙ্কে বিশেষ ব্যবস্থায় রাখা ৪৩ বোতলসহ মোট ৮২ বোতল ফেনসিডিল যার মূল্য ৬৫ হাজার ৬০০ টাকা, জব্দ করে।
এ ঘটনায় ২০১৮ সালের ৪ ফেব্রæয়ারি মধুখালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ সফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯(১) এর ৩(খ) ধারায় শেখ আজম ও মোটরসাইকেল চালক বরগুনা সদরের গুদিঘাটা গ্রামের মো. নূর আলমকে (৩৫) আসামি করে একটি মামলাদায়ের করেন। এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মধুখালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মিজানুর রহমান ২০১৮ সালের ৪ মে পুলিশ কর্মকর্তা শেখ আজমসহ ওই দুইজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের ভারপ্রাপ্ত পিপি সানোয়ার হোসেন বলেন, আদালত পুলিশ কর্মকর্তা শেখ আজমকে মাদক মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। তবে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় অপর আসামি মোটরইকেল চালক নূর আলমকে বেকসুর খালাস দেন। তিনি বলেন, ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন প্রকার মাদক দ্রব্য আমদানী ও খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে গেছে। এ রায়ের ফলে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত ব্যক্তিবর্গ সতর্ক হবে এবং মাদকের আমদানী নিয়ন্ত্রণে ভুমিকা রাখবে।
Leave a Reply