সবুজ দাস, ফরিদপুর : ফরিদপুরে ফলন্ত পেপে গাছ, কলা গাছ ও বেগুন ক্ষেত উপড়ে ফেলে কৃষকের প্রায় দেড় লাখ টাকার ক্ষতি করা হয়েছে। প্রায় এক হাজার পেপে গাছ ও কলা গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের হাটগোবিন্দপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। এব্যাপারে ফরিদপুরের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গতকাল সোমবার একটি মামলা দাখিল করা হয়েছে। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, হাটগোবিন্দপুরের কৃষক মোঃ সাইফুল মোল্যার (৬০) মালিকানাধীন ও ভোগদখলে থাকা ৫১ শতক জমি ২৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যে কিনে নেন মোঃ আলাউদ্দিন খান (৫৫)। তবে জমির মূল্যের মধ্যে ১৩ লাখ টাকা বাকি রেখে গত একমাস পূর্বে জমিটি রেজিস্ট্রি করে নেন আলাউদ্দিন খান। তবে তাদের মধ্যে শর্ত ছিলো যে, যতোদিন পর্যন্ত বকেয়া টাকা পরিশোধ না হবে ততোদিন ওই জমির মধ্যে ১৩ শতাংশ জমি সাইফুল মোল্যার ভোগদখলে থাকবে।
সাইফুল মোল্যা অভিযোগ করেন, ভোগদখলকৃত ওই ১৩ শতক জমিতে তিনি পেপে ও কলা গাছ লাগিয়েছিলেন এবং বেগুন চাষ করেছিলেন। যাতে পেপে ও কলা ধরন্ত ছিলো। বেগুনও ফলেছিলো। ফলন তোলার পূর্ব মুহুর্তে গত ১ নভেম্বর আলাউদ্দিন খান শর্ত লঙ্ঘণ করে ওই জমির সকল পেপে ও কলা গাছ কেটে ফেলেন এবং বেগুন গাছ উপড়ে ফেলেন। তারা বাধা দিতে গেলে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর চেষ্টা করে ও বাড়িতে ভাংচুর করে।
এদিকে, এ ঘটনার পর স্থানীয়রা বিষয়টি সালিশ মিমাংসায় সুরাহা করার আশ্বাস দিলে তিনি এব্যাপারে মামলা মোকদ্দমা করেননি। তবে ঘটনার বেশ কিছুদিন পরেও কোন মিমাংসা না হওয়ায় তিনি সোমবার এ মামলাটি দাখিল করেন। মামলায় আলাউদ্দিন খাঁনকে ২য় এবং তার স্ত্রী দুলি খাতুন (৪৭) কে প্রধান আসামী করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজনকে আসামী করা হয়েছে। এদিকে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে যেয়ে দেখা গেছে, কলা ও পেপে ধরেছে এমন বড় বড় গাছ কেটে পাশে স্তুপ করে রাখা হয়েছে।
সেখানে বিভিন্ন গাছের বোটায় এখনো রয়ে গেছে অনেক অনেক পেপে। কাঁদি যুক্ত কেটে ফেলা কলা গাছ পড়ে আছে। এসব গাছ কেটে সেই বাগানের জমি চাষ দেয়া হয়েছে। পুরো জমি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে পেপে। যেগুলো ফাঙ্গাসে এই কয়েকদিনে সাদা হয়ে গেছে। পাশেই আরেকটি জমিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অনেক পেপে। স্থানীয়রা জানান, জমিটি আগে সাইফুল মোল্যার ছিলো। তিনি বিক্রি করার পরেও তারা আলোচনা করেই এখানে এসব পেপে, কলা গাছ ও বেগুন ক্ষেত করেছিলো। তবে এভাবে জোর করে সেসব ফল ধরা গাছ কাটা উচিত হয়নি।
তারা এটিকে অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক হিসেবে বর্ণনা করেন এবং যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকলকে খাদ্য উৎপাদনে উৎসাহী হতে বলেছেন এবং আবাদি জমি বিনষ্ট করতে না করেছেন; তখন এহেন কান্ড চরম অপরাধ বটে। এ ঘটনায় আদালতে মামলা দাখিলের সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুরে জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট সত্যজিৎ মুখার্জী বলেন, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনেভেস্টিগেশনকে অভিযোগ তদন্তে নির্দেশ দিয়েছন। তিনি বলেন, আমরা ন্যায় বিচার চাই।
Leave a Reply