স্টাফ রিপোর্টার : ফরিদপুরে আয়ূব ফকির (২৬) নামে এক ইজিবাইক চালককে বিস্কুটের সাথে চেতনানাশক ঔষধ খাইয়ে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। একই সাথে হাসপাতালে ভর্তির পর তার সাথে অমানবিক আচরণের ঘটনা ঘটেছে। ঐ যুবক জেলার সালথা উপজেলার সোনাপুর গ্রামের কানচু ফকিরের ছেলে। বর্তমানে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। সোমবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আয়ূব এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘রবিবার দুপুরের দিকে সালথা উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন বাইপাস সড়কের মোড় থেকে ৪’শত টাকা রিজার্ভ ভাড়া নেয় ৬ যাত্রী। তারা বোয়ালমারী হাসপাতালে যাবে বলে জানায়। তাদের মধ্যে তিনজন নারী ও তিনজন পুরুষ ছিলো।
এরপর বোয়ালমারী হাসপাতালের পাশে গিয়ে তারা নামে এবং বসতে বলে। প্রায় ২ ঘন্টা পর তারা আসে। সেখান থেকে আমাকে সাতৈর বাজারের দিকে নিয়ে যায়। পথিমধ্যে তারা বিস্কুট খায় এবং আমাকেও বিস্কুট খেতে দেয়। আমি বিস্কুট খেলে অসুস্থ্য যাই। তখন সন্দেহ হলে পথে কাউকে না পাওয়ায় গাড়ি দাড় করাতে পারিনি। তারপর আর কিছু মনে নেই।’ ভুক্তভোগী যুবকের ভাই সায়েম ফকিরের সাথে কথা বলে জানা যায়, জীবিকার তাগিদে প্রতিদিন ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চালাতো আয়ূব। রবিবার রাতে সালথা থানা পুলিশ এলাকার চৌকিদারের মাধ্যমে জানায়, তার ভাইকে অজ্ঞান অবস্থায় ফরিদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কোতয়ালি থানার এস. আই. আলমগীর শহরের ভাঙ্গা রাস্তার মোড় থেকে তাকে উদ্ধার করে। তবে, তার ইজিবাইকটি ছিনতাইকারীরা নিয়ে গেছে। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘ধার দেনা হয়ে দেড় লক্ষাধিক টাকা দিয়ে ভাইকে গাড়িটি কিনে দেয়া হয়েছিলো। গাড়ি চালিয়েই কিস্তির টাকা দেয়া হতো এবং সংসার চালানো হতো। আমরা প্রশাসনের মাধ্যমে গাড়িটি ফিরে পাওয়ার দাবি জানাচ্ছি। সুস্থ্য হলে আমরা থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করবো।’
এ বিষয়ে ফরিদপুর কোতয়ালি থানার এস. আই. আলমগীর হোসেন বলেন, ‘শহরের ভাঙ্গা রাস্তার মোড়ের ট্রাফিক পুলিশের কাছে অজ্ঞান অবস্থায় এক যুবক রয়েছে, এমন খবরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করি। তবে, কে বা কারা তাকে রেখে গেছে বলতে পারি না।’এদিকে, হাসপাতালে গিয়ে অন্যান্য রোগী ও রোগীর স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আয়ূবকে ভর্তি করা হয় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কিন্তু রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত তাকে কোনো চিকিৎসা দেয়া হয়নি। পরে তার এক স্বজন আসলে চিকিৎসা দেয়া শুরু করে। এ বিষয়ে কর্তব্যরত নার্স জানায়, ‘হাসপাতালে স্যালাইন সেট না থাকায় তাকে স্যালাইন দিতে পারিনি। স্যালাইন সেট হাসপাতালে নেই, বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়।’
Leave a Reply