স্টাফ রিপোর্টার : এগারো লক্ষ টাকার ৩৫টি স্মার্টফোন নিয়ে উধাও ‘কনন্ট্রিভেন্স ডিস্ট্রিবিউশনস’ এর বিক্রয়কর্মী টেরিটোরি সেলস ম্যানেজার (টি.এস.এম)। মোবাইল ফোন গুলো বিক্রয় করে অর্থ আত্মসাৎ করার অপরাধে ঐ বিক্রয় কর্মীর বিরুদ্ধে ঢাকার তেজগাঁও থানায় মামলা দায়ের করেছে প্রতিষ্ঠানের প্রোপাইটর কে এম আহমেদ দিদাত। মামলা নং ১০। ঐ বিক্রয়কর্মীর নাম মোঃ সোহেল ফকির (৩৪)।
সে ফরিদপুর সদরের সাদীপুর এলাকার মোঃ কালাম ফকিরের ছেলে। মামলা সূত্রে জানা যায়, ‘ওয়ান প্লাস’ স্মার্ট ফোনের দেশব্যাপী ডিস্ট্রিবিউটর ‘ ‘কনট্রিভেন্স ডিস্ট্রিবিউশনস’। ঢাকায় তাদের বাংলা মোটর প্রধান কার্যালয়ে এ বছরের জানুয়ারীতে টিএসএম পদে যোগদান করেন সোহেল। সে তেজগাঁও বসুন্ধরা এলাকার খুচরা মোবাইল বিক্রয়ের দোকানে মোবাইল সরবরাহের দায়িত্ব ছিল।
বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্স লেভেল-৬, ব্লক- ডি এর দোকান নং- ৩৯ এ তাদের একটি শাখা অফিস রয়েছে। এজাহার থেকে জানা যায়, গত পহেলা এপ্রিল শুক্রবার তাদের বিক্রয় কর্মী সোহেল বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্স এর বিভিন্ন দোকানে বিক্রয়ের জন্য সরবরাহ করা ‘ওয়ান প্লাস’ এর ৩৫ টি মোবাইল ডিসট্রিবিউশন অফিস ফেরত চেয়েছে বলে উত্তোলন করে। পরে সেগুলা অন্য দোকানে বিক্রয় করে টাকা অফিসে জমা না দিয়ে টাকা আত্মসাত করে পালিয়ে যায়।
‘কনন্ট্রিভেন্স ডিস্ট্রিবিউশনস’ হাউজের ম্যানেজার আনিসুর রহমান বলেন, সোহেল আমাদের বিক্রয়কর্মী। দোকানের চাহিদা মোতাবেক সোহেলের মাধ্যমেই বাজারে ফোনগুলো সরবরাহ করা হয়েছিল। দোশরা এপ্রিল শনিবার বসুন্ধরার বিভিন্ন দোকানে সরবরাহ করা ফোনের টাকা তুলতে গেলে দোকানদাররা বলেন সোহেল ফোনগুলো অফিস ফেরত চেয়েছে বলে নিয়ে গেছে। এজন্য দোকানদাররা আমাদের কোন টাকা পরিশোধ করেনি।
এসময় আমরা সোহেলের খোজ করতে গেলে তার মোবাইল বন্ধ পাই। আগের দিন শুক্রবার হওয়ায় সে অফিসে রিপোর্ট করেনি। পরেন দিন খোজ নিয়ে ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে জানতে পারি সোহেল মোবাইল গুলো অন্য দোকানে কম দামে বিক্রি করেছে। সেই দোকানী আমাদের জানান তারা নগদ টাকায় মোবাইল গুলো কিনেছেন।
ভাউচারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভাউচার টাকা পরিশোধের সময় দিয়ে থাকি। সে মার্কেটের নিয়োগকৃত এজেন্ট হওয়ায় দোকানীরা কম দামে আপডেট ফোন পেয়ে তারাহুরা করে কিনেছে। সোহেলর টাকাগুলা অফিসে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করে পালিয়েছে।
সে এক দোকানে নয় কয়েকটি দোকানে ফোনগুলো বিক্রি করেছে তিনি আরো বলেন, আত্মসাৎ করা ৩৫ টি মোবাইলের পাইকারি মূল্য এগারো লক্ষ ১৩ হাজার টাকা। সর্বনিম্ন ৩৪ হাজার থেকে ১লক্ষ টাকা দামের মোবাইল ছিল সেখানে। ‘কনন্ট্রিভেন্স ডিস্ট্রিবিউশনস’ এর প্রোপাইটর কে এম আহমেদ দিদাত বলেন, আমরা ওয়ান প্লাস স্মার্ট ফোনের ডিলান। ঢাকা সহ সারা দেশেই আমরা ফোন বিক্রয় করে থাকি।
আমরা ফোনগুলো বাজারে বিক্রয় কর্মীর মাধ্যমে বাকিতে সরবরাহ করি। পরে এন এস এম কর্মী গিয়ে টাকা তুলে আনেন। তিনি বলেন, সোহেল আমাদের বিশ্বস্থ ছিল। সে যে এমন কাজ করবে তা ধারনা ছিল না। তিনি আরো বলেন, আমরা সোহেলের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেছি। তাদের বলেছি আমার ফোনের বিক্রয়ের পরিমান টাকা ফেরত দিলে মামলার বিষয়টা শিথিল করবো। তবে তাকে চাকরীতে আর যোগদান করতে দেওয়া হবে না।
সোহেলের পিতা মোঃ কালাম ফকির বলেন, সোহেল শুক্রবার রাতে হঠাৎ করেই বাড়ি এসেছিল। অফিসের কাজে এদিকে এসেছিলাম তাই বাড়িতে ঘুরে গেলাম। শনিবার সকালে উঠে খাবার খেয়ে অফিসে যোগ দিতে হবে বলে বাড়ি থেকে বের হল। তার অপরাধের ব্যপারে আমরা কোব আচই পাইনি। তিনি বলেন, সোহেলের অফিস থেকে রবিরার যোগাযোগ করলে জানতে পারি তার আত্মসাতের কথা।
আমি সোহেলের সাথে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে বন্ধ পাচ্ছি। আমার ছেলে অপরাধ করলে তার শাস্তি পাওয়া উচিৎ। আমার সাথে যোগাযোগ করলে আমি অফিসে জানাবো বলেছি তাদের। ঘটনার পর থেকে সোহেল ফকির পলাতক থাকায় তার মোবাইলে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তেজগাঁও থানার এসআই (নিরস্ত্র) খোকন বাওয়ালী বলেন, তাদের অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় গত ৫ এপ্রিল ৪২০/৪০৬ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। আমরা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামীকে ধরতে কাজ করছি। খুব তারতারিই তাকে আমরা ধরতে সক্ষম হব।
Leave a Reply