বিজয় পোদ্দার, ফরিদপুর : ২৭ নভেম্বর রবিবার সকাল ১১.০০টার দিকে আমার মুঠো ফোন বেঁজে যাচ্ছিল। আমি তখন গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উজানীতে মাঠে কৃষি কাজ করছিলাম। কয়েকবার মুঠো ফোনটি বাজার পর কাঁদা যুক্ত হাতেই কলটি রিসিভ করে বুঝতে পারলাম চির চেনা ছাড়াকার মাহাফুজ খান বাদলের কষ্ঠস্বর “বিজয় শুনছো নাকি আমাদের কবি জুয়েল নাকি নাই” আমি বললাম কি বলেন ভাই কোথায় গেছে কিছুক্ষণ নিরব থেকে তিনি বলেন ইন্তোকাল করেছেন। আমি মনে মনে তার প্রয়াত আত্মার শান্তি কামনা করলাম। আর যেন পাথর হয়ে গেলাম।
বয়স তো বেশি হয় নি প্রায় ৫০ বছর। দীর্ঘদিন আমরা এক সাথে সাহিত্য সাংস্কৃতিক চর্চায় পথ চলেছি। এক সঙ্গে কবিতা লেখেছি, জাতীয় কবিতা পরিষদ, অনুপ্রাস, সাহিত্য পরিষদ, চাঁদের হাটসহ বিভিন্ন সংগঠনে কাজ করেছি। আমি মাঠ থেকে উঠে আসলাম আমাদের সহকর্মী ওয়ালী নেওয়াজ বাবু ভাইকে ফোন করলাম তিনি জানালেন সকাল ৯টায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কবি জিয়াউল হক মিঞাজী না ফেরার দেশে চলে গেছেন। সংসারে দুই ভাই এক বোন স্ত্রী ও এক কন্যা রেখে গেছেন। তিনি শহরের আলীপুরের মরহুম রহিম মিঞাজীর ২য় পুত্র।
তার অকাল মৃত্যুতে ফরিদপুরের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের যে ক্ষতি হলো তা শোধরাবার নয় কখনও। জীবনে আড্ডা প্রিয় লোক ছিলেন। ঢাকায় কালের কণ্ঠ ও জনকণ্ঠেও চাকুরী করেছেন। কিন্তু মুক্ত মনের অধিকারী হওয়ায় কারো বষ্যতা মেনে নেন নি। তিনি ফিরে এসেছেন ফরিদপুরে। একটা স্মৃতি আজ খুব মনে পড়ছে প্রতি বছর পুর্ণিমার রাতে শহর থেকে হাজীগঞ্জ পর্যন্ত পদ্মার পাড় ধরে জ্যোৎ¯œা বরণে আমরা রাত পার করে ভোরকে স্পর্শ করতাম। কোন কোন বছর সংগীত শিল্পী বাদল দাসও থাকতো আমাদের সাথে থেমে থেমে রবীন্দ্র সংগীতের সুরে ভাসতাম আমরা। আজ কবি জিয়াউল হকের মৃত্যুতে এই টুকু বলি তুমি যেতে পারো যতদুর মন চায়/চলে যেতে পারো অবশ্যই/কিন্তু অকাল শব যাত্রায় নয়…..।
Leave a Reply