সবুজ দাস, ফরিদপুর :
ফরিদপুর সদর উপজেলার রাজস্ব তহবিল থেকে একটি ঘর নির্মানে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় উপজেলার বদপুরস্থ মুর্যালীদাহ গ্রামের হতদরিদ্র পরিতোষ কর্মকার এর জন্য উপজেলার রাজস্ব তহবিল থেকে একটি ১ তলা বিশিষ্ঠ ঘর নির্মান করা হচ্ছে। এতে নি¤œ মানের মেয়াদত্তীর্ণ ইট ব্যবহার করে নির্মিত হচ্ছে ঐ ঘরটি। এ বিষয়ে পরিতোষ কর্মকার জানায়, আমার কোন স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি না থাকায় উপজেলা চেয়ারম্যানের মাধ্যমে সরকারি ভাবে আমার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে।
তবে ঘরের কাজ শুরুর সময় থেকেই নি¤œ মানের ইট ব্যবহার করে নির্মিত হচ্ছে। আমি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রশ্ন করলে তারা আমাকে জানিয়েছিলেন যে এই নিম্ম মানের ইট মাটির নিচে থাকলে ঘরের উপর কোন প্রভাব পরবে না। তবে আমি একজন অসহায় মানুষ হওয়ায় ঘরের কাজ বন্ধ না হয়ে যাওয়ার ভয়তে এ বিষয়ে কোন প্রতিবাদ করতে পারিনি। পরিতোষ সরকারের সাথে একই সুরে সুর মিলিয়ে তার স্ত্রী ও এলাকার কয়েকজন জানান, আমরা তো অসহায় ব্যাক্তি। উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইইএনও মহোদয়ের হস্থক্ষেপে পরিতোষ সরকারকে এ ঘরটি দেয়া হয়েছে।
তবে এমন নি¤œ মানের ইট খোয়া ব্যবহার করে ঘরটি নির্মান করা হলেও আমরা সংশ্লিষ্ঠ ঠিকাদার প্রভাবশালী হওয়ায় এর কোন প্রতিবাদ করতে পারিনি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ঠ কাজের মিস্ত্রি নি¤œ মানের ইট ব্যবহারের কথা স্বীকার করে জানান, আমাদের যে ধরনের সরঞ্জামাদি দিবে, আমরা সেই গুলো দিয়েই কাজ সম্পন্ন করব। তবে এ খানে যে ধরনের ইট ব্যবহার করা হচ্ছে তা খুবই নি¤œ মানের, ইট দেখলে বুঝা যায় যে মেয়াদত্তীর্ণ ইট।
জানা যায়, ফরিদপুর সদর উপজেলার রাজস্ব তহবিল থেকে পরিতোষ সরকারের জন্য ২২ ফিট ৮ ইঞ্চি চওড়া ও ১৯ ফিট ৬ ইঞ্চি লম্বা ১ তলা বিশিষ্ঠ ঘর নির্মান এর কাজ শুরু করা হয়। এই ঘর নির্মানে যাবতীয় রক্ষনা বেক্ষনের দায়িত্ব পালন করছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সিএ কামাল হোসেন। তার তত্তাবধানেই ঐ ঘরের সকল সরঞ্জামাদি ক্রয় করা হচ্ছে। বর্তমানে নির্মিত ঐ ঘরে যে মেয়াদীত্তীর্ণ ইট খোয়া ব্যবহৃত হচ্ছে, তা কামাল হোসেনের তত্ত¡াবধানের ব্যবহৃত হচ্ছে।
এ নিয়ে কামাল হোসেন কে প্রশ্ন করলে তিনি সাংবাদিকদের ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি। তবে ঘর নির্মানে কোন ধরনের অনিয়ম হচ্ছে না দাবি করে জানান, ঐ ইট ঘর মালিক পরিতোষ কর্মকারই পছন্দ করেছে। তবে যাই হোক আমি এক্ষনি ঐ ইট দিয়ে ঘর নির্মানের কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিচ্ছি। এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিটন ঢালি জানিয়েছেন, এ ঘর নির্মানে আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি। সরেজমিন তদন্ত করে সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। কোন ভাবেই খারাপ মানের ইট বা অন্য কিছু ব্যবহার করে এ ঘর নির্মিত হবে না।
এ দিকে কামাল হোসেন উপজেলা পরিষদ এর একজন দায়িত্বশীল সরকারী কর্মকর্তা হয়ে কিভাবে এ ঘর নির্মানের মালামাল ক্রয় করে তা নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। উপজেলা রাজস্ব তহবিল থেকে যে ঘরটি নির্মিত হচ্ছে, তা একজন লাইসেন্সধারী ঠিকাদারই ঐ কাজ সম্পন্ন করবেন। সেক্ষেত্রে কামাল হোসেন সরকারী চাকরি করে কিভাবে এই কাজের তদারকি করে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে জনমনে। তবে যাই হোক সরকারি কাজ নিয়ম মেনেই সম্পন্ন হবে বলে প্রত্যাশা করছেন ফরিদপুরের সচেতন মহল।
Leave a Reply