স্টাফ রিপোর্টার : সুশাসন প্রতিষ্ঠায় তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়নের বিকল্প নেই আলোচনা সভায় বললেন বক্তারা। “তথ্য প্রযুক্তির যুগে জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিত হোক” এ প্রতিপাদ্য বিষয়ের আলোকে ফরিদপুর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এবং সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), ফরিদপুর ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি’র) যৌথ উদ্যোগে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার বিষয়ক দিবস ২০২২ উদযাপন হয়। জেলা প্রশাসক ফরিদপুর এর সম্মেলন কক্ষে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আশেকুল হকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার।
জেলা প্রশাসন আয়োজিত এ আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন; শাহ্ মোঃ ইশতিয়াক আরিফ, সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ; সুমন রঞ্জন সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার; ও মোঃ আব্দুর রাজ্জাক মোল্যা, উপজেলা চেয়ারম্যান। বিশেষ অতিথিগণ তাদের আলোচনায় বলেন; তথ্য অধিকার আইনের কার্যকর প্রয়োগ হলেই সুশাসন নিশ্চিত হবে, দুর্নীতি হ্রাস পাবে সুতরাং আইনটির যথাযথ প্রয়োগের কোন বিকল্প নেই।
তাই বক্তারা আইনটির কার্যকর প্রয়োগে আরও ব্যাপক প্রচারণার উদ্যোগ গ্রহণের পাশাপাশি কেউ যাতে দুরভিসন্ধিমুলকভাবে কোন কর্মকর্তাকে হয়রানী না করে সেদিকেও খেয়াল রাখার তাগিদ দিলেন। আলোচনা সভার শুরুতেই সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক)’র পক্ষ থেকে জেলার তথ্য বাতায়নের অর্ন্তভুক্ত ৭১ টি দপ্তরের ওয়েব পোর্টালের উপর পরিচালিত একটি ফলোআপ জড়িপরের ফলাফলসহ তথ্য অধিকার আইনটির উপর একটি উপস্থাপনা প্রদান করা হয়। ওয়েব পোর্টালের ফলোআপ জড়িপে দেখা যায় গত বছরের তুলনায় এবছর উল্যেখযোগ্য হারে তথ্য হালনাগাদ হয়েছে।
মুক্ত আলোচনা পর্বে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) সভাপতি এ্যাডভোকেট শিপ্রা গোস্বামী বলেন; ফরিদপুরের গণমানুষের অধিকার সচেতন করে তুলতে তথ্য অধিকার আইনটি বাস্তবায়নে শুরু থেকে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের সহযোগিতায় কাজ করে যাচ্ছে তার অংশ হিসেবে আমরা ফরিদপুরে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষকে ওরিয়ন্টেশন প্রদান, তথ্য মেলার আয়োজন, তথ্য মেলার ডেস্ক পরিচালনা, আবেদন ফরম পুরণসহ আবেদন প্রতিযোগিতার মতো কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে আসছি।
তিনি বলেন কেননা এটি একটি জনবান্ধব আইন। আইনটি প্রচার পেলেই জনগণ আরও অধিকার সচেতন হয়ে উঠবে। মুক্ত আলোচনা পর্বে আরও বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক পান্না বালা, এনজিও নেত্রী আসমা আক্তার মুক্তা, রাজেন্দ্র কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহযোগি অধ্যাপক রিজভী জামান, সাবেক অধক্ষ্য মোঃ শাহজাহান মিয়া প্রমূখ। প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন; বাংলাদেশ সংবিধানে নাগরিকের চিন্তা, বিবেক ও বাক স্বাধীনতাকে অন্যতম মৌলিক মানবাধিকার হিসেবে স্কীকৃতি দেয়া হয়েছে এরই একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হচ্ছে “তথ্য অধিকার” এবছরের দিবসটির তাৎপর্য হলো “তথ্য প্রযুক্তির যুগে জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিত হোক”।
তথ্য জনগণের অধিকার আর মানুষের এই অধিকার নিশ্চিত করনে তথ্য অধিকার আইনটি বাস্তাবয়নের কোন বিকল্প নেই তবে জনগণের মাধ্যমে যেন এই আইনির দ্বারা কোন সরকারি কর্মকর্তা হেনস্তার শিকার না হয় সেদিকটিও খেয়াল রাখতে হবে। পরিশেষে তিনি সচেতন নাগরিক কমিটি সনাক ও টিআইবিকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সম্প্রতি জেলার তথ্য বাতায়নের ওয়েব পোর্টাল সম্পর্কিত জড়িপ কার্যক্রমটি পরিচালনার জন্য এবং তাদের জড়িপে যে তথ্য উঠে এসেছে তা অবিলম্বে সকল সরকারি দপ্তরকে তাদের নিজ নিজ দপ্তরের তথ্য হালনাগাদ করার নির্দেশনা প্রদান করেন।
আলোচনা সভায় জেলার সকল সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাগণ, বেসরকারি সংস্থাসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ বিশেষ করে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, জনপ্রতিনিধি, নাগরিক মঞ্চ, সুশীল সমাজ প্রতিনিধি, এনজিও প্রতিনিধি, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, ইয়ুথ সেচ্ছাসেবী, ছাত্র-ছাত্রী, সনাক, ইয়েস, এসিজি ও ব্যাবসায়ী প্রতিনিধিসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভার শেষে দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত “সুশাসন নিশ্চিত করণে তথ্য অধিকারের বিকল্প নেই” শীর্ষক বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। বিতর্কে জেলা স্কুল ও সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ২টি দল অংশগ্রহণ করে। জেলা স্কুলের দলটি বিজয়ী হয়। পরিশেষে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আশেকুল হক এর ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে আলোচনা সভাটির সমাপ্ত হয়।
Leave a Reply