স্টাফ রিপোর্টার : ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার মালীগ্রামে অ্যাম্বুলেন্সে আগুন লেগে নিহত ৭ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের লাশগুলো পুড়ে নাড়িভুড়ি বেরিয়ে হাড়গুলো শুধু অবশিষ্ট রয়েছে। লাশের পড়া গন্ধে চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। নিহতরা সকলে একই পরিবারের। তাদের বাড়ি ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের ফেলাননগর গ্রামে। শনিবার (২৪ জুন) ১১টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে নিহতরা হলেন, উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের ফেলাননগর গ্রামের প্রবাসী আজিজার রহমানের স্ত্রী তাছলিমা বেগম (৫৫)তার মেয়ে কমলা পারভিন (২৬), বিউটি বেগম (২৪), নাতি হাসিব (৮), হাফসা (২), আরিফ(১২), ওমেহেদি(১২)। এর মধ্যে কমলা বেগম ঢাকায় বসবাস করেন। ছোট মেয়ে বিউটি বেগম উপজেলার শেখর ইউনিয়নের মাইটকুমরা গ্রামের মাহমুদ ইসলাম রনির স্ত্রী।
স্থানীয় ও পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের ফেলাননগর গ্রামের সৌদি প্রবাসী আজিজার রহমানের স্ত্রী তাছলিমা বেগম হৃদরোগে আক্রান্ত হলে এক মাস আগে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা শেষে বড় মেয়ে কমলা বেগমের বাসায় ছিলেন। শনিবার সকালে তারা ঢাকা থেকে বোয়ালমারী গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। পথিমধ্যে দুর্ঘটনায় সাতজনই প্রাণ হারান। এ বিষয়ে ভাঙ্গা উপজেলার ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা মো : আবু. জাফর বলেন, সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে তারা খবর পেয়ে দুর্ঘটনাস্থলে পৌছান। তবে তার আগেই ভস্মীভূত অ্যাম্বুলেন্সের যাত্রীরা পুড়ে অঙ্গার হয়ে যায়।
বোয়ালমারী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোশারেফ হোসাইন এর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে ওই বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের শান্তনা দেওয়া হয়। শোকাহত পরিবারে শোকের মাতম চলছে। খুবই মর্মান্তিক হৃদয় বিদারক ঘটনা, যা সহ্য করার মতো নয়। ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার জানান, ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) বিপুল চন্দ্র দে কে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত শেষে তিন কর্মদিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। এছাড়া নিহতদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে এবং আহতকে ১০ হাজার টাকা প্রদান করা হবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
প্রসঙ্গত ভাঙ্গা- মাওয়া – ঢাকা এক্সপ্রেসওয়ের মালীগ্রাম ফ্লাইওভার উপর অ্যাম্বুলেন্সে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আগুন ধরে ৭ জন নিহত হয়। এ সময় নিহতদের মৃতদেহ পুড়ে অঙ্গার হয়ে যায়। অ্যাম্বুলেন্সের চালককে আহতাবস্থায় ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনার পরএক্সপ্রেসওয়ে প্রায় দুই ঘন্টা যাবত যান চলাচল বন্ধ থাকে। তবে কি কারণে অ্যাম্বুলেন্সটিতে আগুন লেগে যায় তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে এটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এপ্রোচের সাথে ধাক্কা লাগে এবং আগুন ধরে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে। সিলিন্ডার বিস্ফোরণের কারণে অ্যাম্বুলেন্সটিতে আগুন ধরে যায় বলে প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে।
Leave a Reply