স্টাফ রিপোর্টার : ফরিদপুরের নগরকান্দায় একটি মুরগির ট্রাকে ডাকাতির দায়ে জড়িত চার ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে ফরিদপুর জেলা পুলিশ। এ সময় ডাকাতি হওয়া পাঁচ লাখ ৮৬ হাজার টাকার মধ্যে এক লাখ সাত হাজার টাকা এবং মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়। এ ব্যাপারে এক প্রেস ব্রিফিং-এ পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান জানান, ডাকাতি করে নেওয়া মোবাইলের সুত্রে ঘটনার পাঁচ মাস পর ফরিদপুর, গাজীপুর ও ঢাকার আশুলিয়া এলাকা থেকে ওই ডাকাত দলের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ সুপারের কাযালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ প্রেসব্রিফিং এর আয়োজন করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন, মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার যদুয়ার গ্রমের আব্দুস সালাম বেপারী (৪২), একই গ্রামের মো. সেলিম সরদার (৩০), মো. রুবেল আকন (৪০) ও পাভেল খান (৩২)। গত ২ এপ্রিল দুপুর দেড়টার দিকে ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কে নগরকান্দার বাসাগাড়ি এলাকায় এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বারিখাল গ্রামের বাসিন্দা সুলতান খানের ছেলে মুরগী ব্যবসায়ী সোহেল খান (২৪) ঝিনাইদহ থেকে মুরগি কিনে আনার জন্য ট্রাক চালক ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁ গ্রমের মৃত আনোয়ার খাঁর ছেলে ট্রাক চালক মো. নুরুস খা (৩৬) ও তাঁর দুই সহযোগী পিরোজপুরের ইন্দলকান্দির ঘোষেরহাট গ্রামের নাসির শেখের ছেলে রাকিব শেখ (২০) ও একই গ্রামের মুত আব্দুল লতিফের ছেলে বেলায়েত হোসেনকে (২৩) পাঠান।
ট্রাকটি ২ এপ্রিল সোয়া ১টার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ফরিদপুরের নগরকান্দার বাসাগাড়ির এলাকায় এলে দুটি মোটরসাইকেলে করে ডাকাত দলের পাঁচ সদস্য তাদের গতি রোধ করে। পরে তারা ট্রাকের চালক ও দুই সহযোগীকে গাড়ি থেকে নামিয়ে মহা সড়কের পাশে নিয়ে গিয়ে তাদের কিল ঘুষি মেরে নগদ ৫ লাখ ৮৬ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ডাকাতি করে গাড়ির ট্রাকের চাবি ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায়। এ ঘটনায় ট্রাক চালক মো. নুরুস খাঁ বাদী হয়ে ২ এপ্রিল অজ্ঞাত ব্যাক্তিদের আসামি করে নগরকান্দা থানায় একটি মামলাদায়ের করেন।
প্রেস ব্রিফিং-এ পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান বলেন, মহাসড়কে দিবালোকে এ ডাকাতির ঘটনার পর তদন্তে নেমে আমরা কোন কুল কিনারা পাচ্ছিলাম না। মোটরসাইকেল নিয়ে ডাকাতি করায় আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম ডাকাত দলের সদস্যরা আশেপাশের এলাকার লোক। পরে ডাকাতি করে নেওয়া মোবাইলের সুত্র ধরে গত ২১ সেপ্টেম্বর মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার যদুয়ার গ্রমে অভিযান চালিয়ে সালাম বেপারীর স্ত্রীর কাছ থেকে ডাকাতি হওয়া মোবাইল ফোনসেটটি উদ্ধার করা হয়। পরে সালাম বেপারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গত ২২ সেপ্টেম্বর দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে যদুরদিয়া থেকে সোহেল সরদার, তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে গাজীপুর চৌরাস্তা এলাকা থেকে রুবেল আকন এবং ঢাকার আশুলিয়া হতে পাভেল খানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ সুপার জানান, এ সময় মোবাইল ফোন সেট ছাড়াও ৪০ হাজার এবং মো. রুবেলের কাছ থেকে ১ লাখ ৭ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত ডাকাতদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা সবাই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং পলাতক অপর ডাকাতের তথ্য প্রদার করে। পলাতক ডাকাতকে ধরতে এবং অবশিষ্ট টাকা উদ্ধারে অভিযান অব্যহত আছে ।
প্রেস ব্রিফিংকালে অন্যদের মধ্যে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) এমদাদ হোসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) শৈলেন চাকমা, কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল জলিল, নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিরাজ হোসেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নগরকান্দা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন মোল্লা উপস্থিত ছিলেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা নগরকান্দা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন মোল্লা জানান, গ্রেপ্তার হওয়া ডাকাত দলের ওই চার সদস্যকে শনিবার বিকেলে আদালতে সোপর্দ করা হবে। তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী না দিলে পরে রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে।
Leave a Reply