স্টাফ রিপোর্টার :
ফরিদপুরের ভাঙ্গা পৌরসভাধীন ভাঙ্গা বাজারের থানা রোডের কাঠ পট্রির সরকারি ৫৫ শতাংশ জমি অনিয়মতান্ত্রিকভাবে অর্র্থনৈতিক সুবিধা গ্রহনের মাধ্যমে ৮৪ জন ব্যক্তির নামে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে অভিযোগ তুলে সহকারী কমিশনার ভুমির কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন বরাদ্দ না পাওয়া কয়েক শত ব্যাবসায়ী। পরে জেলা প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা এসে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন। আর ভাঙ্গা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভুমি) মুহাম্মদ আল-আমিন ভুমি বরাদ্দে কোনো অনিয়ম হয়নি দাবী করেছেন।
বিক্ষোভকারী ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাবসায়ীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে তারা ওই জায়গায় দোকান দিয়ে ব্যাবসা করে আসছিলো। সম্প্রতি প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই জমি থেকে ব্যাবসায়ীদের উচ্ছেদ করে নিয়মতান্ত্রিকভাবে বরাদ্দ পেতে আবেদন করতে বলা হয়। সে মোতাবেক কয়েক হাজার ব্যাবসায়ী আবেদন করেন। তাদের দাবী, ভাঙ্গার এসি ল্যান্ড গোপনে কিছু মানুষের সাথে আতাত করে ইচ্ছানুযায়ী বরাদ্দ দিয়ে আকষ্মিকভাবে বুধবার জমি বুঝিয়ে দেন। বৃহস্পতিবার বরাদ্দ পাওয়া ব্যাক্তিরা জমির দখল নিয়ে ঘর তোলার চেষ্টা করলে বরাদ্দ না পাওয়া ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাবসায়ীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে। তারা কয়েক ঘন্টা ধরে সহকারী কমিশনারের (ভুমি) কার্যালয়ের ফটকে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে অবরুগ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ পরিচালক (ডিডিএলজি) মোঃ মনিরুজ্জামান ভাঙ্গায় পৌছে নির্মাণকাজ বন্ধের নির্দেশ দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন ভাঙ্গার আলগী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ম. ম. সিদ্দিক, ভাঙ্গা পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাহেব আলী মাতুব্বর, ৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাকী মাতুব্বর, ভাঙ্গা পৌরসভার কলেজ পাড়ের বাসিন্দা মিয়ান মোঃ আকরাম হোসেন প্রমুখ।
আলগী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ম. ম. সিদ্দিক বলেন, দোকান নির্মাণের জন্য অনিয়মের মাধ্যমে জমি বরাদ্দ দিয়েছে প্রশাসন। অনেকেই আবেদন করেছে। কিন্তু প্রকৃত যারা পাওয়ার যোগ্য তারা পায়নি। ঐ জমিতে দীর্ঘ দিন কাঠের ব্যবসা করতেন ভাঙ্গার কাপুড়িয়া সদরদী মহল্লার বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, আমি একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। কাঠের ব্যবসা করে সংসার চালাতাম। আমি আবেদন করে ছিলাম। কিন্তু আমাকে দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।
৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাকী মাতুব্বর বলেন, লটারির মাধ্যমে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় দোকান বরাদ্দ দেওয়া উচিত ছিল। কিন্তু প্রশাসন জমি বরাদ্দের স্বচ্ছতার কোন পরিচয় দেয়নি। কোন প্রক্রিয়ায় বরাদ্দ হলো তা আবেদনকারিরা জানতে পারেনি।
এদিকে, ২০০৯ সালে জনৈক নুর হোসেন মোল্যা একটি দেওয়ানী মামলা করেন। সেই মামলায় উপজেলা ভুমিকর্মকর্তার প্রতি সমন জারী করা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে নুর হোসেন মোল্যা গংদেরও কোন বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।
ভাঙ্গা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ আল-আমিন জানান, এটি সরকারি জমি। আগে কিছু অবৈধ দখলদার ছিল। পাশের মাদ্রাসার নামে কিছু জমি লিজ দেয়াছিল। আমরা অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আবেদন নেই। আবেদন যাচাই বাছাই করে ভাঙ্গার বাসিন্দা ও প্রকৃত ব্যবসায়ী ৮৪ জনকে যথাযথ প্রক্রিয়ায় দোকান নির্মাণের জন্য জমি বরাদ্দ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। াদ্রাসার নামেও জমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এখানে কোন অনিয়ম হয়নি।
ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ডিডিএলজি মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে আমি কাজ বন্ধ করতে এসেছি। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ঐ জমিতে দোকান নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকবে।
উল্লেখ্য, ভাঙ্গা বাজারে ৫৫ শতাংশ খাস জমিতে ১০টি কাঠের দোকান ছিল। পার্শ্ববর্তী মাদ্রাসার নামে কিছ জমি লিজ দেয়া ছিল ও একটি বড় গর্ত ছিল। প্রশাসন ঐ জমি দখল মুক্ত করেন। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আবেদন গ্রহণ করেন। গত বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) প্রশাসন ৮৪ জনেরমধ্যে ঐ জমি বরাদ্দ দেয়।
Leave a Reply