চরভদ্রাসন অফিস :
ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার বিচার বিভাগ (ফৌজদারী ও দেওয়ানী আদালত) জেলা শহর থেকে ভাংগা উপজেলায় হস্তান্তর না করার দাবীতে উপজেলা সদর বাজারে আয়োজিত মানবন্ধন মঙ্গলবার সকাল সোয়া ১০ টায় পন্ড করে দিয়েছেন স্থানীয় একটি পক্ষ।
জানাগেছে. চরভদ্রাসনের ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ মোতালেব হোসেন মোল্যার নেতৃত্বে গত তিনদিন ধরে উপজেলা জুড়ে মাইকিং করে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। মঙ্গলবার সকালে উপজেলা সদর বাজারে পূর্ব ঘোষিত মানববন্ধনে জনসমাগম শুরু হলে একপি পক্ষের লাকজন এসে মানবন্ধনের মাইক বন্ধ করে দেয় এবং উপস্থিত জনসাধারণকে সরে যেতে বাধ্য করেন। এসময় কিছুটা উত্তেজনা দেখো দিে থানা পুলিশ বাজারে উপস্থিত হয়ে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখেন। তবে মানববন্ধনের সমাবেশ পন্ড হওয়ার পর উপজেলা চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ইউএনও’র কাছে জেলা প্রসাশক বরাবর একটি স্মারকলিপি পেশ করেছেন।
চরভদ্রাসন উপজেলার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোঃ মোতালেব হোসেন মোল্যা জানান, পূর্ব ঘোষনা অনুযায়ী মানববন্ধনে লোকজন জড়ো হতে শুরু করলে স্থানীয় সাংসদ সমর্থিত নেতাকর্মীরা ছুটে এসে সমাবেশের মাইক বন্ধ করে দেয় এবং উপস্থিত লোকজন তাড়িয়ে দেয়। পরে উপজেরা নির্বাহী অফিসার জেসমিন সুলতানার কাছে জেলা প্রশাসক বরাবর মানববন্ধন কর্মসূচীর লিখিত দাবী দাওয়া সম্বলিত স্মারকলিপি পেশ করা হয়।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, উপজেলাবাসী যুগ যুগ ধরে ফরিদপুর জেলা শহরে অবস্থিত ফৌজদারী ও দেওয়ানী আদালতের মাধ্যমে বিচারকী সেবা গ্রহন করে আসছে। ফরিদপুর জেলা শহর উপজেলা সংলগ্ন হওয়ায় স্বল্প সময়ে, স্বল্প খরচে ও খুব সহজে নিজেদের মামলা মোকাদ্দমা চালিয়ে আসছে। কিন্ত উপজেলার বিচার বিভাগ ভাংগা উপজেলায় হস্তান্তর করা হলে উপজেলাবাসী চরম দুর্ভোগের শিকার হবেন। কেননা চরভদ্রাসন উপজেলা থেকে ভাংগা উপজেলার সড়ক পথের দুরত্ব রয়েছে প্রায় ৫৬ কিলোমিটার। একই সাথে চরভদ্রাসন থেকে ভাংগা উপজেলা যাতায়াতের জন্য আঞ্চলিক ও মহাসড়ক মিলে তিন দফায় পরিবহন পরিবর্তন করতে হয়। এতে উপজেলাবাসী চরমভাবে জনহয়রানীর শিকার হবে।
একই সাথে দরিদ্র জনগোষ্ঠী কোর্টে হাজিরা দিতে গিয়ে সারদিন কালক্ষেপন করবে। এতে তাদের অতিরিক্ত অর্থ, সময়, শ্রম ব্যয় সহ হয়রানীর শিকার হবে। ফলে মামলা মোকাদ্দমার পাকে পড়ে গরিব জনগোষ্ঠী কর্মহীন হয়ে পড়বে এবং উপজেলাবাসী তাদের ন্যায্য বিচার প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হবে। তাই মানবন্ধনে উপজেলার বিচার বিভাগ পূর্বের স্থলে অর্থাৎ ফরিদপুর শহরে বহাল রাখার দাবী তোলা হয় স্মারকলিপিতে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ফরিদপুর জেলা সদর থেকে পাঁচটি উপজেলার দেওয়ানী ও ফৌজদারি আদালত ভাঙ্গায় স্থনান্তরের উদ্যোগ নেওয়ার বিষয়টি জানাজানি হয়। এর পর থেকেই ধারাবাহিক আন্দোলনে নামে আইনজীবী সমিতি ও সাধারন জনতা। একই কর্মসূচি পালন করছে নগরকান্দা ও সালথায়।
গত ৪ মার্চ ফরিদপুরের জেলা ও দায়রা জজ এ সংক্রান্ত (কোর্ট স্থানান্তরের) ইতিবাচক মতামত দিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠান।
ফরিদপুর জেলা সদর থেকে দেওয়ানী ও ফৌজদারি আদালত স্থানান্তরের থানা গুলো হলো ভাঙ্গা, সদরপুর, চরভদ্রাসন, সালথা ও নগকান্দা। #
Leave a Reply