1. ajkerfaridpur2020@gmail.com : Monirul Islam Titu : Monirul Islam Titu
  2. jmitsolution24@gmail.com : support :
  3. titunews@gmail.com : Monirul Islam Titu : Monirul Islam Titu
ক্যান্সার-প্যারালাইসিস-লিভার চিকিৎসায় লতিফ ফকিরের দরবার
শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ০২:১৪ অপরাহ্ন
নোটিশ বোর্ড :
আজকের ফরিদপুর নিউজ পোর্টালে আপনাদের স্বাগতম । করোনার এই মহামারীকালে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। সচেতনে সুস্থ থাকুন।

ক্যান্সার-প্যারালাইসিস-লিভার চিকিৎসায় লতিফ ফকিরের দরবার

  • Update Time : মঙ্গলবার, ৮ নভেম্বর, ২০২২
  • ৩২০ জন পঠিত
ক্যান্সার-প্যারালাইসিস-লিভার চিকিৎসায় লতিফ ফকিরের দরবার
ক্যান্সার-প্যারালাইসিস-লিভার চিকিৎসায় লতিফ ফকিরের দরবার

স্টাফ রিপোর্টার : ডাক্তারের নিকট থেকে চিকিৎসার আশা শেষ হয়ে গেছে এমন সব রোগীকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ্য করে তোলার এক বিস্ময়কর দরবার খুলেছেন লতিফ ফকির (৫৫)। ক্যান্সার, লিভার ক্যান্সার, ফুসফুসের ক্যান্সার, প্যারালাইসিস, বাতের ব্যাথা সহ নানা ধরনের দূরারোগ্য রোগীদের চিকিৎসা করেন তিনি। দেড় থেকে তিন মাসেই তারা সুস্থ হয়ে যান বলে তার দাবি। এভাবে গত কুড়ি বছরে প্রায় ৮ হাজার মানুষের চিকিৎসা করে তাদের শতকরা ষাট ভাগ রোগীই সুস্থ হয়েছেন বলে তিনি জানান।

দেশ-বিদেশ তথা ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা সহ বিভিন্ন স্থান থেকে তার কাছে রোগী আসে। ফরিদপুরের সদর উপজেলার নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের গোলডাঙ্গীতে বাসিন্দা ছিলেন এই লতিফ ফকির। তবে পদ্মা নদীর ভাঙ্গনে বসতভিটা বিলীন হওয়ার পরে সম্প্রতি তিনি আস্তানা গেড়েছেন সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের হাট গোবিন্দপুর গ্রামে। সেখানে ভগ্নিপতির কেনা জমিতে গত পনের দিন আগে ঘর তুলে ঘরের পশ্চিম দিকের ঘরে বানিয়েছেন একটি দরবার ও আসন। এখানেই এখন নতুন করে শুরু হয়েছে তার দরবারি চিকিৎসা।

সরেজমিনে তার দরবারে গেলে গত শুক্রবার কথা হয় তার সাথে। এসময় তিনি তার চিকিৎসা বিদ্যার আদ্যোপান্ত খুলে বলেন। আমার কাছেতো আসে মনে করেন ডাক্তারি চিকিৎসা মতামত শেষ কইর্যা। ফাস্টেতো একটা কবিরাজের কাছে মানুষ আসেনা। শেষ কইর্যা আসে তারপরে কবিরাজি ওষুধ বানায় দেই।কিভাবে বুঝেন কার কি রোগ হয়েছে? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, রোগীরা ডাক্তারি কাগজপত্র, মতামত নিয়ে আসে; যেইডা দেইখ্যা ডাক্তার ওষুধপানি দিছর কাজ হয় নাই। আমি আবার করি কি ওই গাছগাছড়া দিয়ে তাগে ওষুধের ফাইল বানায় দেই।

সেভেন পাশ দাবিদার লতিফ ফকির ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন বুঝতে পারেন? জবাবে তিনি জানান, না.. ওরা যেই আল্ট্রাসনোগ্রাম নিয়ে আসে ওরা বলে, পাশাপাশি আমি দেখি, নিজেই দেখি, অভিজ্ঞ। নতুন এই আস্তানায় আসার পর এই পনের দিনে গত শুক্রবারই তার কাছে প্রথম নতুন রোগী এসেছিলো একজন। জানালেন, তার ফুসফুসের অসুখ। তিনি আড়াইশো টাকায় এক ফাইল ওষুধ বিক্রি করেছেন। তবে তিনি কবিরাজি ফি হিসেবে ওষুধের বাইরে কোন টাকা নেন না।

লতিফ ফকিরের টিনের ছাপড়ার এই কাঁচা মাটির ঘরে কবিরাজি দরবারের সামনের অংশটুকু মুদি দোকান ঘরের মতো ঝাপ লাগানো। ঘরের মধ্যে পশ্চিম কোনে মাঝামাঝি ক্যাশবাক্সর মতোই একটি জলচৌকি রাখা। তার উপরে রয়েছে কাগজের ফুল, আগরবাতি, গোলাপ জলের বোতলের সারি, সরু মোমবাতির প্যাকেট, বিড়ির প্যাকেট, দিয়াশলাই, আপেল সহ আরো কিছু জিনিষপত্র। একপাশে একটি বড় সুটকেসের মতো ব্যাগ রাখা মাটিতে। তার পেছনে বড় একটি ঢোল রাখা। জলচৌকির অন্যপাশে একটি পিড়ির মতো আসন। পেছনে হেলানের ব্যবস্থা আছে। সেখানে জায়নামাজ পাতা। এটি লতিফ ফকিরে আসন। এখানে বসে তিনি রোগী দেখেন।

কবিরাজী চিকিৎসা দাবি করলেও তার এই দরবারের চিত্র দেখে মনে হবে কোন পীর-ফকিরের হুজরা খানা। লতিফ ফকির জানান, তিনি আজমীর শরীফ থেকে এই কবিরাজি শিখেছেন। সেও আরেক ঘটনা। যৌবন বয়সে তিনি পাগলের মতো হয়ে যাওয়ার পর কিভাবে যেনো চলে যান ভারতের আজমীরে। সেখানে তিনি আল আমীন নামে এক ব্যক্তির সাক্ষাৎ পান। ওই আল আমীন তাকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ্য করে এই কর্ম শিখিয়ে দেন। এরপর তিনি দেশে এসে নিজেই ওই চিকিৎসা শুরু করে দেন। এখন ওই আল আমীনই তার ওস্তাদ। তিনি প্রতিবছরের রজব মাসের ৬ তারিখে বাড়িতে ওরস করেন।

ক্যান্সার-প্যারালাইসিস-লিভার চিকিৎসায় লতিফ ফকিরের দরবার

ক্যান্সার-প্যারালাইসিস-লিভার চিকিৎসায় লতিফ ফকিরের দরবার

লতিফ ফকির বলেন, এখানে গাছগাছড়ার মাধ্যমে কবিরাজী চিকিৎসা করি। রোগের উপর ডিপেন্ড করে চিকিৎসার সুস্থ্যতার সময় নির্ভর করে। দেখা যায়, ক্যান্সারের রোগী তিন মাস চার মাস, লিভার ফাংশনের রোগী এক দেড় মাস লাইগ্যা যায়। হরিতকি, বহেরা, আমলকি, আম গাছ, জাম গাছ, লজ্জাবতির ছাল সহ নানা গাছ গাছড়া দিয়ে ওষুধ বানিয়ে ফাইল করে বিক্রি করেন। এছাড়া সরিষার তেল দিয়ে মালিশের তেলও বানান। পাঁচশো মিলিলিটার ওজনের ভেষজ পথ্যের এসব প্রতিটি ফাইলের মূল্য আড়াইশো টাকা৷

হাটগোবিন্দপুর গ্রামের স্থানীয় মীর করিম নামে এক ব্যক্তি বলেন, আমি ওনার সাথে কথা বলেছি। এসবে আমার বিশ্বাস নেই। নগরকান্দার ছাগলদিতে অনেক বছর আগে এমন এক হুজুরের আবির্ভাব দেখেছি। এক গ্লাস পানি পড়ে তিনি পুকুরে ঢেলে দিতেন। এরপর সেই পুকুরের পানি নিতে হাজার হাজার মানুষ ভিড় করতো। আসলে কুসংস্কার আর সুচিকিৎসার অভাবে এসব অপচিকিৎসা জেঁকে বসে। কোন কোন সময় ব্যাপকভাবে তাদের নামও ছড়িয়ে পড়ে। তবে লতিফ ফকির নতুন এসেছেন। তার গন্তব্য কতোদুর তা বলতে পারছিনা।

এব্যাপারে ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. ছিদ্দিকুর রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বিষয়টি ফরিদপুরের পুলিশ বিভাগকে জানানোর অনুরোধ জানান। ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল জলিলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এব্যাপারে ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান। এছাড়া বিষয়টি ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকারকেও অবগত করা হয়।

ক্যান্সার-প্যারালাইসিস-লিভার চিকিৎসায় লতিফ ফকিরের দরবার

ক্যান্সার-প্যারালাইসিস-লিভার চিকিৎসায় লতিফ ফকিরের দরবার

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© পদ্মা বাংলা মিডিয়া হাউজের একটি প্রতিষ্ঠান
Design & Developed By JM IT SOLUTION