মোঃ সরোয়ার হোসেন, ভাঙ্গা : বীর মুক্তিযোদ্বা আঃ রাজ্জাক মোল্লা। দেশমাতৃকার টানে সাড়া দিয়ে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে যোগ দিয়ে লড়াই করেছেন জীবনবাজি রেখে। দেশের আইনশৃঙ্খলা উন্নয়নে কাজ করার ব্রত নিয়ে যোগ দিয়েছিলেন পুলিশ বাহিনীতে।বঙ্গবন্ধু তাকে ঠিকই মূল্যায়ন করেছিলেন।স্বাধীনতার পর তাকে বঙ্গবন্ধুর নিরাপত্তা এবং সিকিউরিটি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় এবং নির্মম হত্যাকান্ডের আগের দিন পর্যন্ত কাজ করেন নিরলসভাবে। দেশের প্রতি ভালবাসা,বঙ্গবন্ধুর প্রতি দায়িত্ব ও ভালবাসার স্বীকৃতি স্বরুপ তাকে একটি বাড়ি বরাদ্ধ দিয়েছিলেন।কনষ্টেবল থেকে হাবিলদারে পদোন্নতি পাওয়ার সময় এক বিপদগামী চক্রের দ্বারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যাকান্ডের খবর আসে।
পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট সায়েমের বাসভবনে তাকে নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধর জন্মস্থান গোপালগঞ্জের সদরের বলাকইড় গ্রামে ১৯৪৪ সালের পহেলা জানুয়ারী জন্মগ্রহন করেন এই বীর মুক্তিযোদ্বা আঃ রাজ্জাক মোল্লা। আঃ রাজ্জাক মোল্লার পিতা আতিয়ার রসুল গল্প করতেন বঙ্গবন্ধু পরিবারের কথা।বাবা স্বপ্ন দেখতেন ছেলে দেশের জন্য কাজ করবেন। বাবার স্বপ্ন পুরনে তিনি আইনশৃঙ্খলা উন্নয়নে দেশের হয়ে কাজ করার সিদ্বান্ত নেন। ১৯৬১ সালে বেছে নেন পুলিশ বিভাগে চাকুরীর। সুনামের সাথে স্বাধীনতা যুদ্ধ পর্যন্ত অর্পিত দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ব শুরু হলে দেশমাতৃকায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষন শুনে তার ডাকে সাড়া দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন মুক্তিযুদ্ধে।
৯নং সেক্টর কমান্ডার মেজর জলিলের অধীনে যুদ্ধ করেন। মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বীরত্বপূর্ণ যুদ্ধ শেষে প্রথমে তিনি জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু এবং পরবর্র্তীতেু সায়েমের বাসভবনে নিরাপত্তা সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ পর্যায়ে ৭৫ সালের পটপরিবর্তনের পর তাকে তার পদ থেকে কেøাজ করা হয়। এ সময় অসুস্থ অসুস্থ অবস্থায় পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে।চিকিৎসা শেষে হাসপাতালের সার্জন শ্রিামের জন্য ৬ সপ্তাহের জন্য তাকে ছুটি মঞ্জুর করেন। কিন্ত রহস্যজনক কারনে তাকে ছুটি মঞ্জুর না করে মেডিক্যাল ছুটিতে থাকাবস্থায় জোরপূর্বক পটুয়াখালীতে বদলী করা হয়। অসুস্থ থাকা সত্যেও তিনি পটুয়াখালীতে যোগদান করেন। পরে অসুস্থ অবস্থায় ৫ মাস দায়িত্ব পালনের পর পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার তাকে ১০ দিনের ছুটি মঞ্জুর করেন।
পরবর্তীতে তিনি চিকিৎসা নিতে ফরিদপুর পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দেন। সেখান থেকেই তিনি পটুয়াখালী পুলিশ সুপার বরাবর প্রেরণ করেন। এক পর্যায়ে তাকে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করা হয়। চাকুরী থেকে বরখাস্ত হয়ে মুষড়ে পড়েন তিনি। আঃ রাজ্জাকের মেয়ে তানিয়া সুলতানা বলেন,১৯৭৫ সালের পর থেকে আমার বাবা একজন ক্ষুদ্র কর্মচারী হলেও ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। চাকুরীতে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন বিবেচনা করে ১৯৭৭ সালে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় একটি বাড়ী বরাদ্ধ দেন সরকার।রাজধানীর মীরপুরের বাড়ী নং ৬/সি এভিনিউ ৪ প্রাপ্ত বাড়ীটি তিনি অনেক টাকা পয়সা খরচ করে তিল তিল করে গড়ে তোলেন।
কিন্ত ষড়যন্ত্রমূলকভাবে জনৈক আখলাখ হোসেন জালিয়াতি করে আঃ সাত্তার নামক একজনের ্নিকট বিক্রি করে তাকে বাড়ী থেকে জোরপুর্বক উচ্ছেদ করা হয়। আশ্রয়স্থল বাড়িটি এবং চাকুরীটি হারিয়ে স্ত্রী ছেলে মেয়ে নিয়ে অর্ধাহার-অনাহারে মানবেতর জীবযাপন করে কাটাচ্ছিলেন। এক পর্যায়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমবার ক্ষমতায় আসলে তার সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য আপ্রান চেষ্টা করেছেন। কিন্ত বারবারই ব্যর্থ হয়েছেন। এক পর্যায়ে হতাশা আর গøøানিতে ভ’গে কয়েক বছর পূর্বে চলে যান না ফেরার দেশ্।ে একজন বীর মুক্তিযোদ্ভা এবং জাতীর জনকের নিরাপত্তা দলের সদস্য হলেও ষড়যন্তের শিকার হয়ে সব কিছুতে বঞ্চিত হন।
একবুক কষ্ট নিয়ে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেও সন্তানেরা আক্ষেপ করে বলেন,বাবার কষ্ট আর জাতীর জনকের প্রতি তার ভালবাসার কথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট বলতে পারতাম যদি । তার সন্তানেরা বলেন,আমার বাবা অনেক কষ্ট করেছেন। আমরা সন্তান হিসেবে দাবী করবো অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কতজনেইতো কত কিছু পায়্। বঙ্গবন্ধুর বিশ^স্থ নিরাপত্তা কর্মী এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদান সত্যেও জীবদ্দশায় বিড়ম্বনার শিকার হয়েছেন। আমাদের একটাই আকুতি আমরা সন্তান হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করে মনের কথাগুলো বলতে চাই।
Leave a Reply