স্টাফ রিপোর্টার :
ঘুর্ণিঝড় সাত্রাংয়ের কারণে বিদ্যুত সরবরাহ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় মঙ্গলবার সন্থা পর্যন্ত বিদ্যুত সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি। এদিকে ফরিদপুরে পাঁকতে শুরু করা আমন ধানের ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। জেলা সদর সহ বিভিন্ন উপজেলায় প্রায় কয়েকশো গাছপালা উপড়ে গেছে ঝড়ে। এতে অসংখ্য বাড়িঘরের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া ঢাকা-ফরিদপুর-বরিশাল এবং ঢাকা-ফরিদপুর-খুলনা- মহাসড়কে গাছ ভেঙ্গে পড়ায় দীর্ঘ ৯ ঘন্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
জানা গেছে, ঝড়ের কারণে দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় বিভিন্ন স্থানে জনগণ চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। জেলার ভাঙ্গা ও আলফাডাঙ্গায় বিদ্যুৎ নেই বলে দাবি করেছেন সেখানকার বাসিন্দারা। জেলার অন্যান্য স্থানেও সোমবার বিকেল ও রাত থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। যদিও মঙ্গলবার দুপুরের পর শহরের কিছু স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরায় শুরু হয়।
ফরিদপুরের ওজোপাডিকোর নির্বাহী প্রকৌশলী মোজাম্মেল হক জানান, ঝড়ে বিভিন্নস্থানে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনেক স্থানে গ্রাহকের বিদ্যুতের তার ছিড়ে যায়। অনেকস্থানে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে ট্রান্সমিটারে সমস্যা হয়। এসব কারণে কিছুস্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিলো। তবে দুপুরের পর থেকে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটতে থাকে।
ফরিদপুরের পল্লী বিদ্যুতের জেনারেল ম্যানেজার আবুল হাসান জানান, সোমবার বিকেলের পর ঘুর্ণিঝড়ের কারণে জেলার বিভিন্নস্থানে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের প্রায় শতাধিক খুটি ভেঙ্গে গেছে। এছাড়া ১৪৪টি স্পটে বিদ্যুৎ সরবরাহের তার ছিড়ে গেছে। একারণে বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্ন ঘটে। তবে আমাদের কর্মীরা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে কাজ করছেন।
এদিকে ঝড়ের কারণে জেলায় পাঁকতে শুরু হওয়া ক্ষেতের আমন ধানের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। এ মৌসুমে জেলার নয়টি উপজেলায় প্রায় ৬৫ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমনের চাষাবাদ হয়েছে। এছাড়া পেঁয়াজ দানা, মুড়িকাটা পেঁয়াজ ও শীতকালীন সব্জির ক্ষতি হয়েছে।
সালথার কৃষক আজিজুল শেখ (৩৫) জানান, তিনি ক্ষেতে দানা ও মুড়িকাটা পেঁয়াজ বপন করেছিলেন। পানিতে ডুবে সব শেষ হয়ে গেছে। এছাড়া আমন ক্ষেতে অনেক গাছে ধার বের হচ্ছে। অনেকগুলো পাঁকতে শুরু করেছে। ঝড়বৃষ্টিতে অনেক ক্ষেতের ধান পড়ে গেছে গাছ থেকে। অনেক ক্ষেতের ধান গাছ বাতাসে বেঁকে শুয়ে পড়েছে মাটির সাথে। এসব গাছের ধান আর পাওয়া যাবে না।
ফরিদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জিয়াউল হক জানান, ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ এখনো জানা যায়নি। তারা ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক ও ফসলের পরিমাণ নির্ণয়ের জন্য কাজ করছেন।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের সময় গাছ ভেঙ্গে পড়ে ঢাকা-খুলনা ও ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ফরিদপুর অংশের অন্তত ২৪/২৫টি স্থানে গাছ পড়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ৯ ঘন্টা পর মঙ্গলবার সকাল ৭টা থেকে পুনরায় যান চলাচল শুরু হয়। এছাড়া মহাসড়কের পাশে বিলবোর্ড ভেঙ্গে পড়ায় কয়েকজন বাস যাত্রী আহত হন। #
Leave a Reply