স্টাফ রিপোর্টার : ফরিদপুরসহ দঃপশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার প্রধান দুটি প্রবেশদ্বার হলো ফরিদপুর রাজবাড়ী রাস্তার মোড় এবং ভাঙ্গা উপজেলার গোলচক্কর তথা ভাঙ্গা এক্সপ্রেস মোড়। এছাড়াও রাজবাড়ী গোয়ালন্দ মোড়। মাদারীপুর মোস্তফাপুর মোড়, ফরিদপুরের কানাইপুর বাজার এলাকায় এমন কোন দিন নাই যে এই পাঁচটি মোড়ে সড়ক দুর্ঘটনা বেশী ঘটে না। সে হোক বড় কি ছোট। প্রতি দিন মানুষের উৎকণ্ঠা ও দুঃচিন্তার শেষ নাই কখন আবার কার মায়ের সন্তান সড়কে ঝড়ে যায়। ফরিদপুর -মাদারীপুর। ফরিদপুর -ঢাকা ও ফরিদপুর – দৌলতদিয়া,ফরিদপুর কানাইপুর। উল্লেখিত ৫ টি মোড়ই খুবই ভয়াবহ মোড়।
সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস করতে হলে বৃহওর ফরিদপুরের ৫টি স্থানে ট্রাফিক ব্যবস্থা জোড়দার করলেই সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস করা সম্ভব বলে মনে করেন সাধারন জনগন। এর মধ্যে রয়েছে জাজিরা পয়েন্টের পদ্মাসেতুর দক্ষিন টোলপ্লাজা এবং ফরিদপুর সদর থানার কানাইপুরের বাজার প্রবেশ পথ। এবং ভাঙ্গা পুকুরিয়ার বাসাগাড়ীর মোড় এলাকা কয়টি ভয়াবহ এবং বিপদজনক। প্রশ্ন জাগতে পারে এই তিনস্থানে ট্রাফিক ব্যবস্থা জোড়দার করলে সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাস হবে কিভাবে? মুন্সিগঞ্জ মাওয়া টোলপ্লাজা এবং মাদারীপুর জাজিরা পয়েন্ট পদ্মাসেতু দক্ষিন প্লাজা দুটিই এখন হয়ে উঠছে বিদজনক।
তাই দুই পাশের টোলপ্লাজালাজায় যারা দায়ীত্ব পালন করেন এবং টোল আদায় করেন তাদের সতর্কতার সহিত একটু সময় বাঁচিয়ে টোল আদায় করে গাড়ীর জটলা কমবে। এতে গাড়ির দীর্ঘ সাড়ির জানজট দ্রæততার সাথে পরিবহনসহ সকল যানবাহনের জটলা কমবে। পাশাপাশি সময় ও জানমালের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনবে। এমন কথা তুলে ধরে কথাগুলো বললেন ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বরগুনা গামী সাকুরা পরিবহনের সুপারভাইজার মোঃ লোকমান হোসেন। পাশাপাশি পদ্মাসেতুতে চলমান মটরসাইকেল বেপরোয়া গতিতে চালানোয়ে ২০২২ সালে কমপক্ষে ৪০/৫০ মটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটে বলে মাদারীপুর হাইওয়ে পুলিশের জোন সূত্র জানায়।
এরপর মাহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশে মটরসাইকেল চলচল বন্ধ হয়ে যায়। পুনরায় গত ২০২৩ সালের বৃহস্পতিবার(২০ এপ্রিল) থেকে পদ্মাসেতুতে ফের মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতি পাওয়ার যাত্রীসহ আরোহীদের দীর্ঘ লাইন নতুন বিপদ আবারও সামনে এসে দাড়ালো বলে মনে করেন ভাঙ্গা পাইলট স্কুলের জনৈক শিক্ষক। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন সড়কে বহু অনিয়মও দুর্ঘনার জন্য দায়ী। শিবচর উপজেলার পাচ্চর বাজার এলাকার বিশিষ্ট সমাজ সেবক আবুল হোসেন হাওলাদার বলেন, ট্রাফিকপুলিশ দায়ীত্ব নিয়ে যদি মোটরসাইকেল আরোহীদের এক্সপ্রেসওয়েতে কোনভাবে উঠতে না দেন এবং ৪ লেনের পাশেই চিকন সড়ক আছে সেটা দিয়ে চলাচলো বাধ্য করলে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা শতভাগ কমানো সম্ভব।
এছাড়া ফরিদপুর ভাঙ্গা থানারোডের প্রবেশপথ তথা ভাঙ্গা থানারপাড় প্রধান সড়ক এলাকা এবং ফরিদপুর সদর থানার কানাইপুর বাজারে প্রবেশ পথে ট্রাফিক ব্যবস্হা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে যানজট মুক্ত অবস্থায় এবং সড়ক দুর্ঘটনা কমিয়ে আনা সম্ভব। এতে একটু হলেও ২১ জেলার মানুষ এই কোরবানির ঈদে নিরাপদে মানুষ ঘরে ফিরতে পারবে। একটি বেসরকারি জড়িপে উঠে আসছে, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা দক্ষিন পশ্চিমাঞ্চলে কমপক্ষে ৯৮% গাড়ী তথা বিভিন্ন ধরনের যানবাহন ফিটনেস বিহীন অবস্হায় এই অঞ্চলে প্রবেশ করে। আর এই অবৈধ গাড়ীগুলো অবৈধ ভাবে চলার কারনে বেশীরভাগ দুর্ঘটনা গুলো ঘটে বলে জানাযায়।
সরেজমিন দেখাগেছে, বহু যানবাহন হাইওয়ে সড়কের উপরেই পরিবহনের রুট পরিবর্তন করে। এটা বিশাল একটা অনিয়ম। এতে একদিক জানজট বাড়ে অপরদিকে, সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি ও বাড়ায়। এই উপজেলার যানজটের কবলে পড়ে পুরো দক্ষিনাঞ্চের পরিবনগুলো যানজট কমাতে ভাঙ্গা পূর্বসদরদি স্কুল গলি দিয়ে গাড়ীগুলো ঘুড়ালে মহাসড়কের যানজট কমে যাবে ৭৫% এমনটাই বললেন ভাঙ্গার বিশিষ্ট সমাজ সেবক এসএম জাহিদ শিকদার। ভাঙা মাইটিভির সাংবাদিক মোঃ সরোয়ার মিয়া বলেন, ঈদে যে পরিমান মানুষ ঢাকা থেকে বাড়ী ফিরেন তার চেয়ে তিনগুন যাত্রী গ্রাম থেকে ঢাকায়ও ফিরেন। এই অগ্রীম বেশী যাত্রী জানজট এড়াতে৪/৫ দিন আগে থেকে নাড়ির টানে বাড়ী ফিরেন তারা।
এতে সড়কে শুরু বিশৃঙ্খলা। বাড়ে যানজট এবং মৃত্যুর ঝুঁকি। অপরদিকে ২০২৩ সালের ২১ এপ্রিল পর্যন্ত ফরিদপুর কানাইপুর সড়ক, ভাঙ্গা এবং মাদারিপুর জেলার টেকেরহাট এপার ওপারের সমস্ত থ্রীহুইলার বন্ধ করাট জোড় দাবী উঠলেও বাস্তবায়নের অবস্থা কম। আবারও দাপিয়ে চলছে বডবডি,নচিমন করিমন। সরেজমিনে দেখাগেছে, ফরিদপুর কানাইপুর বাজার এলাকায় এক থেকে দুই হাজার ব্যাটারিচালিত রিক্ষা ভ্যান শতাধিক ভটভডি শতাধিক নছিমন চলচল করায় এই স্থানটির যানজটের প্রভাব পড়ে পদ্মাসেতু টোলপ্লাজা, ভাঙ্গা বিশ্বরোড, এক্সপ্রেস সড়ক এবং দৌলতদিয়া ফেরীঘাট পর্যন্ত। এই প্রচন্ড যানজট যাত্রীরা পড়ে যায় চরম দর্ভোগে। এ কারনে সড়ক দুর্ঘটনায় পতিত হয় বহু পরিবহন। এখানেও ট্রাফিক পুলিশের উপস্থিতি বেশী নিশ্চিত জরুরি।
অপরদিকে, ভাঙ্গা,বড়ইতলা এবং মাদারীপুর জেলার টেকেরহাট এলাকায় কমপক্ষে ৮/১০ হাজার অটোচালক এবং থ্রী হুইলার চলচল করায় একটি পরিবহন এপার থেকে ওপার যেতে কমপক্ষে ৭/৮ মিনিট সময় লেগে যায় একটি ব্রীজ পার হতে। এ কারনেও সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ে। এখানেও ট্রাফিক ব্যাবস্থা জোরধার করলে দুর্ঘটনা কমে আসবে। মোট কথা, কোরবানির ঈদের বাকি আর মাত্র ১৭ দিন। এই সময়ের মধ্যে উল্লেখিত, স্থানগুলোতে ট্রাফিক ব্যবস্থা জোরদার করলেই ঈদের সড়কের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। এই জেলার ট্রাফিকের ইনচার্জ মোঃ তুহিন লস্করের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমরাও চাই সকল পেশার মানুষ নিরাপদে বাড়ী এবং কর্স্থমল পৌঁছাক।
উল্লেখিত, ঝুঁকিপূর্ন জায়গাগুলোতে তারা ট্রাফিক পুলিশের উপস্থিতি নিশ্চিত করবেন বলে জানান। প্রায় দেড় মাস আগে ফরিদপুরপুর সদর থানার কানাইপুর এলাকায় পরিবহন ও পিক-আপের মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটনাস্থলে একই পরিবারের ৫ জনসহ মোট ১১ জন নিহত হয়। ফরিদপুরবাসী সড়কে আর মৃত্যুর মিছিল দেখতে চান না। সকলে চান মানুষ নিরপদে ঘরে ফিরুক। এ জন্য দরকার ঝুঁকিপূর্ন স্থানগুলোতে ট্রাফিক পুলিশের উপস্থিতি নিশ্চিত করা।
Leave a Reply