স্টাফ রিপোর্টার : ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় একটি দেশী ওয়ান শুটারগান, একটি চাপাতি এবং ছয়টি ধাতব তৈরি ঢালসহ ইউপি সদস্য ও যুবলীগ নেতা সৈয়দ শরিফুল ইসলাম (৪৫)কে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড এ্যকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৬ এর একটি দল। গত রবিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে আলফাডাঙ্গা সদর ইউনিয়নের বিদ্যাধর গ্রামে ওই ব্যক্তির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে এ ঘটনাটিকে ষড়যন্ত্রমূলক হিসেবে আখ্যায়িত করেছে শরীফুলের পরিবারের সদস্যরা। শরীফুল আলফাডাঙ্গা সদর ইউনিয়নের তিন নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। তিনি ওই ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি।
র্যাব-৬ গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ভাটিয়াপাড়ার কোম্পানি কমান্ডার মোহাম্মদ রাসেল স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সৈয়দ শরিফুল ইসলামের বাড়িতে এ অভিযান চালানো হয়। র্যাবের আভিযানিক দলটি আলফাডাঙ্গা উপজেলার সদর ইউনিয়নের বিদ্যাধর গ্রামে পৌঁছামাত্র র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে শরিফুল পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় র্যাব সদস্যরা তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। পরে তার বসত ঘরের পূর্ব পার্শ্বে টিনসেড রান্না ঘরে থেকে একটি দেশী ওয়ান শুটারগান, একটি চাপাতি এবং ছয়টি ধাতব তৈরি ঢাল উদ্ধার করে জব্দ করেন।
ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব দাবি করে বলে, শরিফুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি গ্রামে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করার উদ্দেশ্যে ওইসব দেশীয় অস্ত্র সমূহ নিজ হেফাজতে রাখার কথা স্বীকার করেন। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সোমবার সকালে শরিফুলকে আলফাডাঙ্গা থানায় হস্তান্তর করা হয়। তবে র্যাবের এ বক্তব্য নাকচ করে দিয়ে ইউপি সদস্য ও যুবলীগ নেতার ভাই সৈয়দ জাকের আলী ভোরের রানারকে বলেন, এটি একটি ষড়যন্ত্রমূলক ঘটনা। এলাকায় দুটি দল-পক্ষ রয়েছে। এলাকায় থাকতে হলে একটি পক্ষ সমর্থন করতে হয়।
গত জাতীয় সংসদ নির্বচানে শরিফুল স্বতন্ত্র প্রার্থী আরিফুর রহমানের ঈগল মার্কার পক্ষে কাজ করেছিলেন। দল নির্বাচন উন্মুক্ত করে দেওয়ায় স্থানীয় যুবলীগের সভাপতি হলেও তিনি (শরিফুল) স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন। ‘টোটাল ব্যাপারটা সাজানো’-মন্তব্য করে সৈয়দ জাকের আলী বলেন, যে রান্না ঘর থেকে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলে দেখানো হয়েছে সেটি বসত ঘর থেকে কিছুটা দূরে এবং ওই রান্না ঘরে কোন দরজা নেই। র্যাব সদস্যরা রান্না ঘরে জমিয়ে রাখা মেহগনি গাছের পাতার ভিতর হাত দিয়ে অস্ত্রটি উদ্ধার দেখিয়েছেন।
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, কেউ অস্ত্র রাখলে খোলা রান্না ঘরে তা ফেলে রাখে কি? আলফাডাঙ্গা সদর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এ কে এম আহাদুল ইসলাম বলেন, শরীফুল অস্ত্রবাজী করে না। তিনি এ ইউনিয়নের বার বার ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তাকে হয়রানী করার জন্য ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে ও পরিকল্পিত ভাবে ফাঁসানো হয়েছে। আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা বলেন, এ ঘটনায় র্যাব বাদী হয়ে আলফাডাঙ্গা থানায় অস্ত্র আইনে শরিফুলকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছে। শরিফুলকে সোমবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হবে।
Leave a Reply