স্টাফ রিপোর্টার : ফরিদপুরে একটি মন্দিরে দুর্গা পূজা উপলক্ষে নির্মিত বিভিন্ন প্রতীমা ভাঙচুর করে ক্ষতিসাধন করার ঘটনা ঘটেছে। গত সোমবার দিবাগত রাত ১টা থেকে মঙ্গলবার ভোরের মধ্যে ফরিদপুর সদরের কৈজুরি ইউনিয়নের তাম্বুলখানা বাজার সংলগ্ন সার্বজনীন দুর্গা মন্দিরে এ ঘটনা ঘটায় অজ্ঞাত দুর্বিত্তরা। এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, বাজারের দক্ষিণ পাশে একটি কালী মন্দির ও তার সামনে এই দুর্গা মন্দিরটি অবস্থিত। কালী মন্দিরে কলাসিবল গেট রয়েছে। দুর্গা মন্দিরটি পাকা হলেও কোন কলাপসিবল গেট ছিল না। ওই মন্দিরে দুর্গা পূজা উপলক্ষে নির্মিত দুর্গা, ল²ী ও সরস্বতী প্রতীমার একটি করে হাত এবং গণেশ প্রতীমার মাথা ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কৈজুরি ইউনিয়ন পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি মিঠু নাগ জানান, গত সোমবার ছিল তাম্বুল খানা বাজারের সাপ্তাহিক হাটের দিন। হাটের দিন রাত সাড়ে ১২টা ১টা পর্যন্ত বাজারে লোকজন থাকে। এ নাশকতামূলক ঘটনাটি ঘটেছে রাত ১টার থেকে মঙ্গলবার ভোরের কোন এক সময়ে। তিনি বলেন, ২০২১ সালের জুন মাসে তাম্বুলখানা বাজারের সার্বজনিন কালীমন্দিরের কলাপিবল গেট থেকে প্রতীমা ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছিল। তখন বাজারের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ভাংচুরের সাথে জড়িত এক ব্যাক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তিনি বলেন, দুর্গা পূজার প্রাক্কালে দুর্গা প্রতীমা ভাংচুরের এ ঘটনায় তিনি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এ খবর পেয়ে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সালাহউদ্দিন, ফরিদপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিটন ঢালী, ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ফরিদপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিটন ঢালী বলেন, মন্দিরটি অরক্ষিত ছিল। সামনে কোন গ্রিল বা আটকানোর ব্যবস্থা ছিল না। মন্দির কমিটিকে সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও গ্রিল দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যানের পাশাপাশি সাহায্য করবে উপজেলা প্রশাসন। তিনি বলেন, প্রতীমা ভাঙচুরের ঘটনায় ইউনিয়ন পূজা উদযাপন কমিটির উদ্যোগে মামলাদায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল বলেন, ঠিক নাশকতা বলে এ ঘটনাটিকে মনে হচ্ছে না। তবে একটি দুষ্টচক্র এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারেন। তিনি বলেন, প্রতীমার ভাঙ্গা অংশের আঙ্গুলের ছাপ নেওয়া হয়েছে, তা দিয়ে এ ঘটনার সাথে জড়িত ব্যাক্তিদের সনাক্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ওসি এম এ জলিল বলেন, ২০২১ সালের জুন মাসে এই বাজারের কালী মন্দিরের কলাপসিবল ভেঙ্গে প্রতীমা ভাঙচুরের মামলার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, ওই ঘটনায় মামলার পর একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তবে বর্তমানে ওই ব্যক্তি জামিনে রয়েছেন। তিনি বলেন, ওই মামলায় পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে। মামলাটি সাক্ষীর পর্যায়ে রয়েছে। কিন্তু সাক্ষীরা সাক্ষ্য দিতে গড়িমসি করার মামলার কার্যক্রমে স্থবিরতার সৃষ্টি হয়েছে।
Leave a Reply