মনির মোল্যা, সালথা : বিশ্ব বাজারে খাদ্য-শষ্যর মুল্যে বৃদ্ধি হওয়ায় ধানের আবাদ এর দিকে ঝুঁকছে কৃষকেরা। এবছর ফরিদপুরের সালথায় এবছর ১১ হাজার হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের আবাদ হয়েছে। তবে ডিজেলের মুল্যে বৃদ্ধি ও পানির অভাব থাকায় দুশ্চিন্তায় পড়েছে ধান চাষীরা। উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, এবছর উপজেলার আটটি ইউনিয়নে রোপা আমন ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১১হাজার ২৪৭ হেক্টর। মঙ্গলবার (২৩ আগষ্ট) দুপুর পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে ১০ হাজার ৭৬২ হেক্টর জমিতে। রোপা আমান ধানের বীজ পাটের মধ্যেদিয়ে বপন করা হয়েছে ৪হাজার ৩৩২ হেক্টর জমিতে এবং সেচের আওতায় রোপন করা হয়েছে ৬হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে। ধারনা করা হচ্ছে এবছর রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করবে।
উপজেলার ভাওয়াল ইউনিয়নের পুরুরা গ্রামের কৃষক সিরাজ মোল্যা বলেন, চালের যে দাম তাতে ধান না লাগিয়ে পারা যায় না। তাই এবার পাটের মধ্যেদিয়ে এক বিঘা জমিতে ধান বুনেছি। এছাড়াও সেচের মাধ্যমে ১০ কাঠা জমিতে ধানের চারা লাগিয়েছি। মাঠে-ঘাঠে পানি না থাকায় এবং ডিজেলের দাম বাড়ায় চিন্তায় আছি। বৃষ্টি না হলে বুনানো ধানগুলো না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। আর যদি বৃষ্টি বা পানি হয় তাহলে আশা করি সুন্দর ধান হবে। যদুনন্দী ইউনিয়নের জগন্নাথদি গ্রামের কৃষক সুশান্ত কুমার দে বলেন, চালের যে দাম তাতে ধান না লাগালে খাবো কি। বৃষ্টি ও পানি না থাকায় ধানের বীজ না বুনিয়ে আমি এবার দুই বিঘা জমিতে ধানের চারা লাগাইছি। নিয়মিত সেচ দিতে হচ্ছে, তেলের দাম বেশি, এতে ধান চাষে খরচ বেড়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি যদি হয় তাহলে কিছুটা খরচ কমবে এবং ধানও ভালো হবে। ই
উসুফদিয়া গ্রামের একজন সফল কৃষক কাইয়ুম মোল্যা বলেন, এবছর পাটের মধ্যেদিয়ে ৫বিঘা জমিতে দুইবার করে ধানের বীজ বুনাইছি, পানির অভাবে দুইবার-ই ধানের বীজ নষ্ট হয়ে গেছে। পরে পাট কেটে জমি চাষ করে দুই বিঘা জমিতে আবার ধানের বীজ বুনাইছি। তেলের দাম বৃদ্ধি থাকার পরও মাঝে মাঝে স্যালোমেশিন দিয়ে সেচ দিচ্ছি। আপাতত ধানের গঠন ভালো আছে। তবে বৃষ্টি বা পানি না থাকায় বড় চিন্তায় আছি। উপজেলা কৃষি অফিসার ও কৃষিবিদ জীবাংশু দাস বলেন, এ বছর সালথা উপজেলায় আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ১১ হাজার ২৪৭ হেক্টর জমি। মঙ্গলবার পর্যন্ত ১০ হাজার ৭৬২ হেক্টর জমিতে ধানের বীজ বপন ও ধানের চারা রোপন করা হয়েছে। পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় এবছর অতিরিক্ত সেচের প্রয়োজন হচ্ছে। আমরা সকল কৃষককে পরামর্শ প্রদান করছি যাতে অগভীর নলকূপের মাধ্যমে সেচ প্রদান করে সকল জমি আমন আবাদের আওতায় আনা যায়। বিশ^ বাজারে খাদ্য-শষ্যর মুল্যে বৃদ্ধি পাওয়ায় এবছর রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
Leave a Reply