স্টাফ রিপোর্টার : ফরিদপুরের গত মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গু জ¦রে আক্রান্ত হয়ে শিশু ও নারীসহ চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া গত ৮ আগস্ট ও ১১ সেপ্টেম্বর ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ডেঙ্গু জ¦রে আক্রান্ত হয়ে দুই জনের মৃত্যু সহ জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় থেকে মোট ছয় জনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছে। এ নিয়ে ফরিদপুরে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ৩৮।
গত ২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গু জ¦রে আক্রান্ত হয়ে আরও ২৮৪ জন ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ফরিদপুরের বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে ডেঙ্গু জ¦রে আক্রান্ত হয়ে ৮২১ জনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৪ ঘন্টায় এক শিশু, এক নারী ও দুই পুরষসহ মোট চারজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যু হওয়া শিশুটির নাম সাবিহা (১০)। সে নগরকান্দা উপজেলার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলীর মেয়ে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর রবিবার সাবিহাকে এ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় সকাল সাড়ে নয়টার দিকে।
মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে মারা যায় শিশুটি। মৃত্যু হওয়া নারীর নাম শিউলী (৩৫)। তিনি ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার চতুল গ্রামের মো. মোস্তফার স্ত্রী। তিনি ডেঙ্গু জ¦রে আক্রান্ত হয়ে গত মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে ভর্তি হন। মারা যান ওইদিন রাত সোয়া ১০টার দিকে। এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যু হওয়া অপর দুই ব্যাক্তি হলেন ফরিদপুরের ভাঙ্গার পীরের চর এলাকার সেকেন মাতুব্বরের ছেলে ওয়াসিম (২৩)। তিনি মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে এ হাসপাতালে ভর্তি হন মারা যান ওইদিন দিবাগত রাত ২টার দিকে।
অপরজন হলেন ফরিদপুরের সালথার মো. জুয়েলের ছেলে মো. কাথান (৩২)। তিনি গত শনিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে এ হাসপাতালে ভর্তি হন। তিন দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গত মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মারা যান তিনি। এদিকে ডেঙ্গু জ¦রে আক্রান্ত হয়ে গত ৮ আগস্ট ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে মারা যান মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার কবিরাজপুর গ্রামের শহীদুল্লা মিয়ার ছেলে মাহাবুব মিয়া (৩৫)। তিনি ৭ আগস্ট ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। জেনারেল হাসপাতালে মৃত্যু হওয়া অপর ব্যাক্তি হলে ফরিদপুরের নগরকান্দার ওমানউল্লার ছেলে মোমরেজ (৬৬)। তিনি গত ১১ সেপ্টেম্বর ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে মারা যান।
ফরিদপুরের সিভিল সার্জন মো. ছিদ্দীকুর রহমান বলেন, ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে যে দুইজন মারা গেছেন তাদের নাম মৃত্যুর তালিকায় এতোদিন অন্তভর্’ক্ত করা হয়নি। এজন্য গত ২৪ ঘন্টায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সৃত্যু হওয়া চার জনের সাথে তাদের নাম জুড়ে দেওয়ায় হয়েছে। সিভিল সার্জন বলেন, গত ২১ জুলাই থেকে গতকাল বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ফরিদপুরের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গুজ¦রে আক্রান্ত হয়ে মোট ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে গত ২৪ ঘন্টায় ফরিদপুরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ২৮৪ জন। এ নিয়ে ফরিদপুরে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৯ হাজার ২৭৩ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৮ হাজার ৪১৪জন। চিকিৎসাধীন আছেন ৮২১জন। এর মধ্যে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩৪৫, ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে ৮৫ জন এবং ফরিদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালে ৬৬জন। ফরিদপুরের বাইরে বেশি সংখ্যক রোগী চিকিৎসাধীন আছেন বোয়ালমারী ও মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ওই দুটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৭৩জন করে রোগী চিকিৎসাধীন আছেন।
ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মোডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরিচালক এনামুল হক জানান, ফরিদপুরে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে আমরা ভালো অবস্থানে নেই। যে স্যালাইন আছে তাতে আগামী সপ্তাহ থেকে ঘারতি দেখা যেতে পারে। তবে ১২ হাজার স্যালাইনের ডিমান্ড দেওয়া আছে। স্যালাইন আনার জন্য ঢাকার প্রতিনিধি পাঠানো হয়েছে। তিনি কি পরিমান স্যালাইন আনতে পারেন তার ভিত্তিতে জানাতে পারবো কতদিন কিভাবে চলতে পারবো।
Leave a Reply