1. ajkerfaridpur2020@gmail.com : Monirul Islam Titu : Monirul Islam Titu
  2. jmitsolution24@gmail.com : support :
  3. titunews@gmail.com : Monirul Islam Titu : Monirul Islam Titu
সালথা কলেজের মনোগ্রামযুক্ত টি-শার্টের মূল্য কত?
সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ০৮:২৩ পূর্বাহ্ন
নোটিশ বোর্ড :
আজকের ফরিদপুর নিউজ পোর্টালে আপনাদের স্বাগতম । করোনার এই মহামারীকালে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। সচেতনে সুস্থ থাকুন।

সালথা কলেজের মনোগ্রামযুক্ত টি-শার্টের মূল্য কত?

  • Update Time : শুক্রবার, ৪ নভেম্বর, ২০২২
  • ৪২৭ জন পঠিত
সালথা কলেজের মনোগ্রামযুক্ত টি-শার্টের মূল্য কত?
সালথা কলেজের মনোগ্রামযুক্ত টি-শার্টের মূল্য কত?

হারুন আনসারী : ফরিদপুরের সালথা সরকারি কলেজে এবারের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় উপলক্ষে আনন্দ আয়োজন ও দোয়া মাহফিল শেষ পর্যন্ত অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ একটি অশ্লীল র‌্যাগ ডে’তে পরিণত হয়েছে। কলেজের নাম ও মনোগ্রামযুক্ত টিশার্টে ভাষায় উচ্চারণঅযোগ্য গালিগালাজপূর্ণ কথাবার্তা লিখে মহড়া করেছে কতিপয় বখাটে যুবক। যারা ওই কলেজেরই এবারের এইচএসসির বিদায়ী পরীক্ষার্থী। ভবিষ্যত জীবন গড়ে তোলার এই গুরুত্বপূর্ণ বোর্ড পরীক্ষার আগে প্রস্তুতির সময়ে মনকে একটু প্রফুল্ল করতে বিদায় অনুষ্ঠানে উৎসাহের সাথেই যোগ দিয়েছিলো ওই কলেজের এসব সাধারণ ছাত্রছাত্রী।

তবে সেখানে এসে এখন চরমভাবে বিব্রত ও ভীতিকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে বিশেষ করে ছাত্রীরা। তাদেরকে কার্যত একধরনের জিম্মি করেই এই অশ্লীলতায় মেতে উঠে কতিপয় বখাটে। তারা শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রীদের আবেগকে পুঁজি করে ধরে ধরে তাদের গেঞ্জিতে এসব কুরুচিকর মন্তব্য লিখে দেয়। আবার এই সকল বখাটে তাদের চরম অশ্লীল বাক্য লেখা এসব টিশার্ট পড়ে শিক্ষকদের অজান্তে তাদের সাথে ফটোসেশনও করেছে। সমালোচনার মুখে কলেজ কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বিদায়পর্বের মূল অনুষ্ঠানে এমন কিছুই ঘটেনি। তবে মূল অনুষ্ঠান শেষে ক্লাস রুম থেকে বের হওয়ার পর ছেলেরা আনন্দ করছিলো।

এসময় তিনিও বের হওয়ার সময় কয়েকজন ছেলেমেয়ে তার সাথে ছবি তুলতে চাইলে তিনি সানন্দে তাতে রাজি হন। তবে তারা যে গেঞ্জিতে এসব লিখেছে তাও তিনি স্বভাবতই খেয়াল করেননি। কারণ, এমন একটি নির্মাল আনন্দ আয়োজনে এভাবে তারই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোন শিক্ষার্থী সহপাঠীদের সাথে কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা লিখে পুরো আয়োজনটিকে সমালোচনার মুখে ফেলে দিবে তা ভাবনারও অতীত। জানা গেছে, ফেসবুকে এসব বখাটের ছবি ছড়িয়ে পড়ার পরেই বিষয়টি সকলের দৃষ্টিগোচর হয়। এরপর থেকেই শুরু হয় তীব্র সমালোচনা।

ইংরেজি ওয়েলফেয়ার শব্দের অর্থ কল্যাণ বা মঙ্গল। আমাদের দেশে চাকরি থেকে অবসর নেয়া ব্যক্তি ছাড়াও এই শব্দযুগলের সাথে পরিচিতি ঘটে স্কুল ও কলেজ জীবনেই। দেশের প্রতিটি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার আগে পরীক্ষার্থীদের কল্যাণ কামনায় এই ওয়েলফেয়ারের আয়োজন করে। দীর্ঘদিন একসাথে পথচলা নির্দিষ্ট একটি শ্রেণি বা পরিবেশ থেকে একধরনের বিদায়ী আমেজ থাকে। আর নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা সারাজীবন অনুষ্ঠানটি স্মরণীয় করে রাখতে চায় সহপাঠী বন্ধুদের সাথে নানা সুখস্মৃতিতে।

তবে এবার সালথা উপজেলার সালথা সরকারী কলেজে এইচএসসি শিক্ষার্থীদের এই ওয়েলফেয়ার অনুষ্ঠান যে এমন মন্দানন্দ গ্রাস করবে তা কেউ ভাবতেও পারেনি। অনুষ্ঠানকে ঘিরে অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক ও কুরুচিপূর্ণ পরিস্থিতির অবতারণা হওয়ায় চারদিকে সমালোচনার রি’ রি’ পড়ে গেছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা লজ্জায় পরিবারের কাছে মুখ দেখাতে পারছে না। ছাত্রীদের দশাতো আরো দুঃসহ। শিক্ষাজীবনের গুরুত্বপূর্ণ এই উচ্চমাধ্যমিক পাঠ সম্পন্ন করতে এসে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে এটি তারা যেনো ভাবতেই পারছে না।

এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে আলোচনা করে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানা গেছে। তবে এ ঘটনার পর প্রশ্ন উঠেছে কলেজের সুনাম এবং জড়িত শিক্ষার্থীদের অভিরুচি নিয়ে। যা প্রকারান্তরে ওই কলেজের বর্তমান ও সাবেক সকলের অনুভূতিকেই স্পর্শ করেছে। কলেজের সাবেক একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, দীর্ঘদিন একসাথে লেখাপড়া করার সময় অনেকের সাথে ভালো সম্পর্ক তৈরী হয়। শিক্ষকদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা থেকে বিদায় অনুষ্ঠানে দোয়া মাহফিলের আয়োজন হতো। আমাদের সময় র‌্যাগ-র‌্যাগিং শব্দটিতে সবার ভয় এবং অনীহাও ছিল।

এখনকার ছাত্রছাত্রীরা বিদায় অনুষ্ঠানের দিন স্বাভাবিকভাবেই র‌্যাগ ডে নামে অপসংস্কৃতি উদযাপন করে। যার মাধ্যমে সমাজে অশ্লীলতা ছড়াচ্ছে। সামাজিক অবক্ষয়ের কুফল এসব। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে কলেজের কর্তৃপক্ষ, শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের কাছে জানতে ইচ্ছে করছে এই কলেজের নাম ও মনোগ্রামযুক্ত টিশার্টের মূল্য কতো? এটি বাজার থেকে কেনা অন্য কোন টিশার্টের মতোই মূল্য বহন করে? আজ যারা যেসব উচ্চারণ অযোগ্য কথাবার্তা তারই সহপাঠী ছাত্র কিংবা ছাত্রী বন্ধুর শরীরের টিশার্টে লিখে দিলো, এটি কি তারা তার ভাইবোনের পরনের টিশার্টে লিখে দিতে পারবে?

যদি নাই পারে তাহলে শিক্ষাঙ্গনের মতো পবিত্র স্থানে সহপাঠী বন্ধুরা কি ভাইবোনের মতোই নিরাপদ নয় তাদের কাছে? যাদের সাথে মনখুলে নির্দোষ ছাত্রছাত্রীরা আনন্দে মেতে উঠলো, পরিবারের মতো একসাথে খুনসুটি করলো, তাদের কারো কারো মনের মধ্যে আসলে প্রবৃত্তির কি ভয়ঙ্কর লালসাই না লুকিয়ে রয়েছে? তা দেখা গেলো এতে। সুযোগ পেলেই এই বন্ধুবেশি সহপাঠীই কি হয়ে উঠবে আরেক বন্ধুর ঘাতক কিংবা ধর্ষক? এমন শ্রেণির অপরাধী মানসিকতাপূর্ণ ছেলেদের সাথে অন্য নির্দোষ ছেলেমেয়েদের একসাথে আনন্দ উৎসবের উদযাপন কি বিপদজনক হয়ে উঠলো আগামীর জন্য।

আর যদি এসব তাদের কাছে নিতান্তই ডিজে পার্টির মতো মামুলি কোন গানবাজনা বা নাচানাচি আর দু’চারটে খিস্তি-খেউরির বিষয় হয়ে থাকে; তাহলে এখানে অভিভাবক ও শিক্ষকদের জন্য ভাবনার আছে অনেক কিছু। সবার আগে যেটি ভাবতে হবে তাহলো, এইসকল শিক্ষার্থীরা আসলে এই বিদ্যাঙ্গনে পড়াশুনা করে কি অর্জন করতে পারছে? কিংবা আসলেই এই বিদ্যার্জন তাদের কোন কাজে লাগবে কিনা। নাকি শুধুই একটি সার্টিফিকেট অর্জনের জন্যই এই চেষ্টা? বিষয়টি বিচারের ভার আমরা ছেড়ে দিলাম আমাদের কর্তাগণ এবং সমাজের সুবিবেচকদের কাছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© পদ্মা বাংলা মিডিয়া হাউজের একটি প্রতিষ্ঠান
Design & Developed By JM IT SOLUTION