স্টাফ রিপোর্টার : ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলায় মেহেদী মৃধা (২৩) নামে এক রাজমিস্ত্রীকে কুপিয়ে ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত এক নেতাসহ ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (০৭ জুন) দুপুর ১ টার দিকে ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তাদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীদের নিশ্চিত করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ ইমদাদ হুসাইন। গ্রেপ্তার হলেন- বোয়ালমারী উপজেলা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি এবং একই উপজেলার কামারগ্রাম মৃধাপাড়া এলাকার জাহাঙ্গীর মৃধার ছেলে বিল্লাল মৃধা (২৩), একই গ্রামের কালামিয়ার ছেলে শহীদ (৩৫), লিয়াকতের ছেলে ওবায়দুর (৪৫), ওবায়দুরের ছেলে সোহান (২০), আবু মিয়ার ছেলে গফুর (৫০)।
এরমধ্যে গ্রেপ্তারকৃত বিল্লাল মৃধা বিতর্কিত টিকটিক ভিডিও শেয়ার করার কারণে দুই মাস আগে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানান বোয়ালমারী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মর্তুজা আলী তমাল। এর আগে মঙ্গলবার (০৬ জুন) সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। একইদিন সকালে বোয়ালমারী থানায় এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের বাবা ছালাম মৃধা। যার মামলা নং-৬। মামলায় ৯ জনের নামোল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ৬/৭ জনকে আসামী করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ ইমদাদ হুসাইন বলেন, এ হত্যাকান্ডের মূল হোতা বিল্লাল মৃধা ও শহীদ। স্থানীয় একটি ক্রন্দলের জের ধরে তাদের দুই জনের নেতৃত্বে এ হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়। এছাড়া গ্রেপ্তারকৃত অন্যান্যরা এ হত্যায় সহযোগিতা করেন। এসময় সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) সুমন কর বলেন, এটা ছিল একটা নৃশংস হত্যাকান্ড। হত্যার শিকার হওয়া মেহেদী মৃধা ছিল একজন দরিদ্র রাজমিস্ত্রী। হত্যার ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ অপরাধীদের ধরতে মাঠে নামেন। পরে আসামিদের ফোনের কললিস্ট ও প্রযুক্তির ব্যবহার করে পুলিশের নিরলস প্রচেষ্টায় অপরাধীদের সনাক্ত করতে সক্ষম হই। অত:পর হত্যাকান্ডের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ মূলহোতাসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। বাকিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত পুলিশ (ক্রাইম এন্ড অপস্) শেখ মো. আবদুল্লাহ বিন কালাম, বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আব্দুল ওহাব, জেলা ট্রাফিক বিভাগের টিআই (প্রশাসন) তুহিন লস্কর, পুলিশ পরিদর্শক (অপরাধ শাখা) মো. হাবিল হোসেনসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন ও প্রিন্ট-ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ। প্রসঙ্গ, গত রোববার (৪ জুন) দিবাগত রাত ৯ টার দিকে জেলার বোয়ালমারী পৌর সদরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কামারগ্রামের সালাম মৃধার ছেলে মেহেদী মৃধাকে তার বাড়ির পাশে ধাঁরালো ছেঁনদা দিয়ে কুপিয়ে ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে এঘটনায় পুলিশ জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোট ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে।
Leave a Reply