মোঃ সরোয়ার হোসেন, ভাঙ্গা : ফরিদপুরের ভাঙ্গায় শেষ মুহুর্তে এসে জমে উঠেছে কোরবানীর পশুর হাটগুলো। ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারনায় এখন বেশ সরগরম এলাকার পশুর হাটগুলো। গত কয়েকদিনে হাটগুলোতে বেড়েছে ক্রেতা সমাগম সেই সাথে বেড়েছে বিক্রিও। তবে চলতি বছর পশুখাদ্যের আকাশচুম্বি দাম বৃদ্বির কারনে খামারীদের ব্যয় বৃদ্বি পেয়েছে বহুগুন। যে হারে পশুখাদ্যের দাম বৃদ্বি পেয়েছে সেই প্রত্যাশা অনুযায়ী দাম না পাওয়ায় লোকসানের শংকায় খামারীদের চোখেমুখে পড়েছে চিন্তার ভাজ। প্রতিবছরের ন্যায় এবারও স্থায়ী হাটের পাশাপাশি এলাকায় বসেছে বেশ কয়েকটি অস্থায়ী পশুর হাট।
উপজেলার স্থায়ী পশুহাটের মধ্যে মালীগ্রাম,বাবলাতলা,মুনসুরাবাদ সহ আরও বেশ কয়েকটি অস্থায়ী পশুর হাট বসেছে। এসব হাটে স্থানীয় জাতের মাঝারী সাইজের গরুর চাহিদাই বেশী। কোরবানীকে সামনে রেখে উপজেলার অসংখ্য খামারী গরু মোটাতাজা করেন। এ বছর কিছুটা প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা কারনে গো খাদ্যের দাম বেশী থাকায় পশু পালনে ব্যায় বেড়েছে অনেক। হাটগুলোতে ক্রেতার উপস্থিতি থাকলেও বিক্রেতারা যে পরিমান দাম হাকাচ্ছেন সে পরিমান দাম অনেকটাই কম বলছেন তারা। এলাকার সবচেয়ে সুপরিচিত মালীগ্রাম পশুর হাটে গিয়ে দেখা যায় হাটে প্রচুর পশু আমদানী হয়েছে। কিন্ত আশানুরুপ বিক্রি নেই বলে জানান বিক্রেতারা। এতে দুশ্চিন্তার ভাজ ফেলেছে খামাারীদের চোখে-মুখে। হাটে আসা ক্রেতারা গরু ও ছাগলের দাম কম হাকছেন।
এলাকার চৌকিঘাটা গ্রামের বাদল মিয়া ৩টি ষাড় এনেছেন বিক্রয়ের জন্য। তিনি প্রতিটি ৩ লক্ষ টাকা করে দাম হাকলেও ক্রেতারা বলছেন মাত্র দেড় থেকে ২ লক্ষ টাকা কর্।েএতে তার খরচের টাকাও উঠবেনা বলে জানান তিনি।এভাবে কথা হয় সাউতিকান্দা গ্রামের খামারী ইউনুস আলীর সাথে। তিনি কোরবানীর জন্য পালন করা ১০টি গরু নিয়ে এসেছেন। প্রতিটি গরুর দাম ১ থেকে ২ লক্ষ টাকা করে ক্রেতারা হাকছেন। এতে তিনিও দাম নিয়ে বেশ হতাশ। তবে ক্রয় করতে আসা ক্রেতারা কম দামে পশু ক্রয় করতে পেরে বেশ খুশি। এ ব্যাপারে প্রশাসন বলছেন স্বাস্থ্যবিধি এবং হাটের নিরাপত্তা বজায় রাখতে জালনোট সনাক্ত,মলমপার্টি প্রতিরোধসহ সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আজিম উদ্দিন জানান, প্রতিটি হাটে যথাযথভাবে সরকারী অনুমোদিত নিয়ম অনুসারে ইজারাদাররা খাজনা আদায় করে এবং যথাযত ভাবে হাটের সার্বিক নিরাপত্তা বিধানের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যান এস.এম হাবিবুর রহমান বলেন, উপজেলার পশুর হাটগুলোতে যাতে নির্বিঘেœ পশু বিক্রি হয় সেজন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রানীসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন,প্রতিবছরের ন্যায় এবারও আমরা গরু মোটাতাজা করনের উদ্যোগ গ্রহন করেছি মাঠ পর্যায়ে। উঠোন বৈঠকের মাধ্যমে আমরা খামারীদের কাছে গিয়েছি,খামার পরিদর্শন করেছি যাতে তারা বৈজ্ঞানিক পদ্বতিতে গরু মোটাতাজাকরন করেন।তবে আমি নিশ্চিত করতে চাই যে আমার জানা মতে খামারীরা ষ্টোরয়েড ব্যবহার করেনি। প্রায় ৩ হাজার ৭,শ মত চাষী যারা স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে গরু হ্ষ্টপুষ্টকরন করেছে।
তবে খামারীরা চিন্তিত আছে তারা ঠিকমত পুজি খাটিয়ে বিক্রি করতে পারবে কিনা।তবে আমাদের প্রানী সম্পদ অধিদপ্তরের নির্দেশনা মোতাবেক আমরা চিকিৎসা,পরামর্শ সহ পশুর হাটের যাতে সুস্থ সবল,ষ্টেরয়েডমুক্ত পশু বিক্রি হয় তার যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহন করেছি। পশুর হাটগুলোতে উপজেলা প্রানী সম্পদ এক্সটেনশন অফিসার ডাঃ ফুয়াদ সরকারকে আহবায়ক করে উপ-সহকারী প্রানী সম্পদ কমৃকর্তা মোঃ শহীদ শরীফকে সদস্য সচিব করে এবং প্রানী সম্পদ এক্সটেনশন কর্মকর্তা ডাৎ খায়রুল ইসলামকে আহবায়ক পৃথক ২টি দল গঠন করে হাটগুলোতে তদারকির জন্য পাঠানো হচ্ছে। আমরা বিভিন্ন উপজেলা থেকে প্রচার-প্রচারনার মাধ্যমে চাষীদের উদ্বুদ্ব করেছি,চাষীরা তাদের পশুর ছবিসহ পশুর ওজন ও আনুমানিক মূল্য এই অনলাইন পশুর হাটে দিলে যতদুর সম্ভব কেনাবেচা করতে পারবে। এ দিকে উপজেলার মালীগ্রাম ইজারাদার বলেন, হাটের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য আইনশৃংখলা বজায় রাখা ,মলম পার্টি প্রতিরোধ,জালনোট সনাক্তসহ সকল ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।
Leave a Reply