মোঃ সরোয়ার হোসেন, ভাঙ্গা : ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার তুজারপুর গ্রামের পাট ব্যবসায়ী মেহেদী হাসানের বিপুল পরিমান পাট অভিনব কায়দায় দুর্বৃত্ত চক্রের হাতে ছিনতাই হয়েছে। সম্প্রতি ওই ব্যবসায়ী তার আড়ত থেকে পাট নিয়ে ট্রান্সপোর্ট এজেন্সির মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাট পৌছানোর ব্যাবস্থা করে আসছিলেন। এ ঘটনায় দুর্বৃত্ত চক্রটি ট্রাকে থাকা পাট নিয়ে অন্যত্র পৌছানোর কথা বলে সরে পড়ে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে মামলার পর রোববার অভিযান চালিয়ে পুলিশ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে। দায়েরকৃত মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ওই পাট ব্যবসায়ী মেহেদী হাসান তার নিজস্ব পাটের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উপজেলার মালীগ্রাম বাজার থেকে মাদারীপুরের মোস্তফাপুর এলাকার ‘মেসার্স আজমেরী খাজা ক্রেইন কনটেকটার এন্ড এজেন্সী’’র মালিক বিল্লাল হাওলাদার ও দুলাল হাওলাদারের মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় পাট পরিবহনের জন্য চুক্তি হয়।
ব্যবসায়ী চুক্তি মোতাবেক গতকাল মালীগ্রাম থেকে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় একটি ফাইবার কোম্পনীতে পাট পৌছে দিতে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা মূল্যের ২৫১ মন পাট একটি ট্রাক(ঢাকা মেট্রো-ট-২০-২৫৮৭) যোগে এর চালক আলতাফ ওরফে বাদলের মাধ্যমে পাঠায়। পরে পাট ব্যবসায়ী মেহেদী ট্রাক চালক আলতাফ ওরফে বাদলকে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরটি (০১৯২৯-১৩৫৭৫৮) বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে এজেন্সির মালিক বিল্লাল ও দুলালকে জানালে তারা জানান,পাট বহনকৃত ট্রাকটি রাজবাড়ির খানখানাপুর রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ মেহেদী হাসান জানান, এজেন্সির মালিক সহ ট্রাক চালক সংঘবদ্বভাবে প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে সমুদয় পাট আত্মসাত করেছে। তিনি বলেন,এক পর্যায়ে কুষ্টিয়া ভেড়ামারার ফাইবার কোম্পানীর ম্যানেজার জুয়েল ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান,ট্রাকটি এখানে পৌছেনি।
বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার এজেন্সির মালিক দুলালকে ট্রাক না পৌছানোর কথা জানিয়ে রাজবাড়িতে যেতে অনুরোধ করলেও তিনি কোনএ বিষয়ে কর্ণপাত করেননি। বরং তাদের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও তারা (দুলাল গংরা)কোন প্রকার সহযোগিতাও করেনি। তিনি এ ঘটনায় জড়িত এজেন্সি মালিক শাখাওয়াত মীরা এবং আলমগীর খানও জড়িত রয়েছে বলে জানান।
পরে বিপুল পরিমান মূল্যের পাট খোয়া যাওয়ায় তিনি বাধ্য হয়ে প্রশাসনকে জানান। এ ঘটনায় মেহেদী হাসান বাদী হয়ে বিল্লাল হাওলাদার(৪০),দুলাল হাওলাদার(৪২),মোস্তফা হাওলাদার,নজরুল ঘরামি(৫০) এবং ট্রাক চালক বাদল সহ ৫ জনকে আসামী করে ভাঙ্গা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর রোববারই ভাঙ্গা থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিল্লাল ও দুলালকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠায়।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস.আই সুমন জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্ত ২ জনকে গ্রেফতার করি। চালককে সনাক্তের চেষ্টা করি কিন্ত তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ রয়েছে। পরে জানা যায়,বন্ধ মোবাইলটি অন্য জেলার জনৈক অটোরিক্সা চালকের এবং বহনকৃত ট্রকটির নম্বরটিও ভ’য়া বলে প্রমানিত। পুলিশ চক্রটির সন্ধান করতে আপ্রান চেষ্টা যাচ্ছে বলে জানান তিনি। অচিরেই মালামাল উদ্বার সহ চক্রটির অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
Leave a Reply