1. ajkerfaridpur2020@gmail.com : Monirul Islam Titu : Monirul Islam Titu
  2. jmitsolution24@gmail.com : support :
  3. titunews@gmail.com : Monirul Islam Titu : Monirul Islam Titu
ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল হাসপাতালে বার বার কেন আগুন? - আজকের ফরিদপুর
শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ০৫:০২ অপরাহ্ন
নোটিশ বোর্ড :
আজকের ফরিদপুর নিউজ পোর্টালে আপনাদের স্বাগতম । করোনার এই মহামারীকালে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। সচেতনে সুস্থ থাকুন।

ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল হাসপাতালে বার বার কেন আগুন?

  • Update Time : রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪
  • ২২৯ জন পঠিত
ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল হাসপাতালে বার বার কেন আগুন?
ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল হাসপাতালে বার বার কেন আগুন?

স্টাফ রিপোর্টার : ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল হাসপাতালে বার বার কেন আগুন লাগছে? গত ২২ মার্চ থেকে গত ১৬ মে ৫৪দিনে তিনটি অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবারের অগ্নিকান্ডের ঘটনাটি তুলনামূলক ভাবে বড়। ফরিদপুর শহরের পশ্চিম খাবাসপুর মহল্লায় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পূর্ব পাশে ১৯৯১ সালে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ স্থাপিত হয়। প্রথমে ২৫০ শয্যার হাসপাতাল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলেও বর্তমানে এ হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ৫০০। দুই বছর আগে নাম পরিবর্তন করে কলেজ ও হাসপাতালের নাম রাখা হয় ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

এ হাসপাতালে ফরিদপুরের বিভিন্ন উপজেলা ছাড়াও,আশেপাশের মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর, নড়াইল, মাগুরা, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া ও রাজবাড়ী জেলার রোগিরা নিয়মিত চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে ৫০০ শয্যার হাসপাতাল হলেও এ হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে এক হাজার থেকে এক হাজার দুইশ রোগী ভর্তি থাকেন। তবে শীতকালে এ সংখ্যা ৮০০ থেকে ৯০০ এর মধ্যে নেমে আসে। দুটি বর্হিবিভাগে প্রতিদিন গড়ে দুই থেকে দুই হাজার ২০০ রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন।

গত বৃহস্পতিবার (১৬ মে) সকাল পৌনে ৯টার দিকে হাসপাতালটির নতুন ভবনের দ্বিতীয় তলার পশ্চিম পাশে অবস্থিত ভান্ডাকক্ষে আগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এটি গ্রিল ও থাইগøাস দিয়ে সুরক্ষিত করা। অগ্নিকান্ডের সময় তিন হাজার ৬০০ বর্গ ফুটের ওই কক্ষটি বাইরে থেকে তালাবদ্ধ ছিল। সুরক্ষিত ওই কক্ষে যন্ত্রপাতি, ওষুধ ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছিল। আগুনে এগুলি পুড়ে যায়। পরে ফরিদপুর দমকল বাহিনীর সদস্যরা আগুন নেভায়। হাসপাতালে আগুন লাগার ঘটনায় ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ও চিকিৎসা নিয়ে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। অনেক রোগী আতংকের কারনে দ্রæত হাসপাতাল থেকে নিচে নেমে আসে।

ওই সময় বৈদ্যুতিক যোগাযোগ ও হাসপাতালের জেনারেটর বন্ধ থাকায় নয়তলা বিশিষ্ট হাসপাতাল ভবন থেকে সিড়ি বেয়ে রোগীদের নিচে নামতে হুরুস্থুল বেধে যায়। গত ৫৪ দিনে এ হাসপাতালে অগ্নিকান্ডের মোট তিনটি ঘটনা ঘটে। অগ্নিকান্ডের প্রথম ঘটনা ঘটে গত ২২ মার্চ। ওইদিন হাসপাতালের মর্গে আগুন লাগে। ওই মর্গে ওই মৃতদেহ ছিল এবং মর্গটির মূল ফটক বাইরে থেকে বন্ধ ছিল। ওই কক্ষে কোন বৈদ্যুতিক সংযোগ ছিল না। এর নয়দিন পর দ্বিতীয় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে হাসপাতালের নয়তলা (নতুন ভবন) ভবনের ছয় তলায়। এ দুটি অগ্নিকান্ডে ডাকা হয় দমকল বাহিনীকে। প্রতিটি অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে নয়তলা বিশিষ্ট হাসপাতালের নতুন ভবনে। এ ভবনের অদূরে অবস্থিত চারতলা বিশিষ্ট পুরাতন ভবনে এখন পর্যন্ত অগ্নিকান্ডের কোন ঘটনা ঘটেনি।

আগুন ধরার পর রোগদের অবস্থা

গত বৃহস্পতিবার অগ্নিকান্ডের ঘটনায় রোগীদের পড়তে হয় মহা বিপদে। নয়তলা শিশু ওয়ার্ চার দিনের শিশুকে নিয়ে অবস্থান করছিলেন শহরের সিএনবি ঘাট এলাকার বাসিন্দা ফরিদ বেপারির স্ত্রী মিতু (৩০)। মিতু জানায়, আমার চারদিনের শিশু ইকিউবেটারে রাখা হয়েছিল। নার্সরা যখন আগুনের কথা বলে আমাদের দ্রæত নেমে যেতে বলেন, তখন আমি কাচ ঘরে তাকা শিমুকে নিয়ে দ্রæত সিড়ি দিয়ে নেমে যাই। ১৩ মিনিট বাইরে তাকায় শিমুর গায়ের রঙ কারো হয়ে যায়। পরে নার্সদের সহায়তায় আবার শিশুটিকে উপরে নিয়ে আসি। পাঁচতলায় পুরুষ সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে প্রতিবন্ধী স্বিামী জাহাঙ্গীর ফকিরের চিকিৎাসা করাচ্ছিলেন ফরিদপুরের সদরপুরের সেলিনা বেগম (৪০)। সেলিনা বেগম বলে আগুন লাগার পর হাসপাতাল ত্যাগ করার নির্দেশ আমার পর আমি আমার স্বামীকে কিভাবে পাজাকোল করে সিড়ি ভেঙ্গে নিচে নামি সে কষ্টের কথা ভাষায় ব্যক্ত করতে পারবো না। একটা লোকও আমার সাহায্যে আগায় আসে নাই।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যা বলছেন

ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারি পরিচালক দীপক কুমার বিশ্বাস বলেন, যে ভান্ডার কক্ষে অগুন লেগেছে সেটি মূলত পুরনো যন্ত্রপাতি রাখা হতো। কক্ষটি সুরক্ষিত। গ্রিল ও থাই গøাস ও চারটি তালা দিয়ে বন্ধ থাকে। এ টি স্যাবোটাজ হতে পারে না কেননা এত নিরাপত্তা ভেদ করে কারও পক্ষে ওই কক্ষে আগুন দেওয়া সম্ভব নয়। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, তবে যেহেতু বার বার অগ্নিকান্ডের ঘটনায় প্রশাসনের উদ্যোগে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে সে তদন্তে অগ্নিকান্ডের প্রকৃত করাণ উঠে আসবে। তদন্ত কমিটি এখনও কাজ শুরু করেনি। বার বার এ হাসপাতালে কেন অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটছে এ বিষয়গুলি খতিয়ে দেখার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাত সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার গঠিত এ কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এ কমিটির প্রধান করা হয়েছে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী। সাত সদস্য বিশিষ্ট কমিটির অপরসদস্যগণ হলেন, পুলিশ সুপারের প্রতিনিধি, ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকের প্রতিনিধি, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী, স্বাস্থ্য ও প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী, ওজোপাডিকোর নির্বাহী প্রকৌশলী ও ফরিদপুর দমকল বাহিনীর সহকারি পরিচালক। এ কমিটির প্রধান এডিএম মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী বলেন, আজ রবিবার থেকে এ কমিটি কাজ শুরু করবে। তবে আগামী মঙ্গলবার ফরিদপুরের দুটি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য ওই নির্বাচনে ব্যাতিব্যস্ত থাকতে হবে। ফলে এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে উঠবে। তবে আমরা দ্রæত এ তদন্ত কাজ নশেষ করার উদ্যোগ নেব।

চিকিৎসক নেতার মূল্যায়ন

ফরিদপুর বিএমএ ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি আ স ম জাহাঙ্গীর চৌধুরী বলেন, আমি এ অগ্নিকান্ডের বিষয়গুলি লোক মুখে শুনেছি। বিএমএর সভাপতি হিসেবে হাসপাতালের পরিচালক এ ব্যাপারে আমাকে অবগত করেনি। তবে এক্ষেত্রে নাশকতার বিষয় উড়িয়ে দেওয়া যায় না। হাসপাতালে এ ধরনের অগ্নিকান্ড কোন ভাবে মেনে নেওয়া যায় না। আগামীতে যাতে এ জাতীয় ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে এ জন্য আমি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে জরুরী ভিত্তিতে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© পদ্মা বাংলা মিডিয়া হাউজের একটি প্রতিষ্ঠান
Design & Developed By JM IT SOLUTION