স্টাফ রিপোর্টার : ফরিদপুরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২৪ ঘন্টায় তিন নারীর মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি ওই সময়কালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও ২২৫জন ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ফরিদপুরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে একদিনে তিনজনের মৃত্যু হওয়ার ঘটনা এই প্রথম। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সুত্রে গত সোমবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টার মধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে যে তিন নারীর মৃত্যু হয়েছে তার দুজন ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার এবং একজন গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার বাসিন্দা।
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার মৃত্যু হওয়া ওই নারীর নাম আবেজান বেগম (৭০)। তিনি কাশিয়ানী উপজেলার পাড়–লিয়া ইউনিয়নের পাড়–লিয়া গ্রামের বাসিন্দা মনিরউদ্দীনের স্ত্রী। সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে তিনি ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে মারা যান তিনি। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার লস্করদিয়া ইউনিয়নের লস্করদিয়া গ্রামের বাসিন্দা মোসলেম মিয়ার স্ত্রী মরিয়ম বেগম (৩৫) এর।
তিনি গত রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ হাসপাতালে ভর্তি হন। সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে মারা যান তিনি। মৃত্যু হওয়ো অপর নারী নগরকান্দা উপজেলার চর যশোররদী ইউনিয়নের চাঁদহাট গ্রামের রওশন মাতুব্বরের স্ত্রী রোখসানা আক্তার (২৫)। তিনি গত শনিবার এ হাসপাতালে বর্তি হন। গত সোমবার বিদাগত রাতে মারা যান তিনি। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক এনামুল হক বলেন, ডেঙ্গুতে এ পর্যন্ত এ হাসপাতালে ২৪জনের মৃত্যু হয়েছে।
ফরিদপুরে নতুন করে ২২৫জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ায় এ জেলায় এবছরে সাত হাজার ১৬২ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলেন। এর মধ্যে ছয় হাজার ৫১৩ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। বর্তমানে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৬২৫জন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে ফরিদপুর মেডিকেলে ২৩৯ এবং ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে ৯২ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎর্সাধীন ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার যুগী বরাট গ্রামের বাসিন্দা কৃষক ইলিয়াস শেখ (৪০) জানান, গত রবিবার এসেছি। মেডিকেলে ভিড় বইলা এই হাসপাতালে আইছি। আইসা বিপদে পরছি। মেডিকেল হাসপাতালে তাও নিচে পাতার কিছু দেয়, এ হাসপাতালে তাও দেয়নি। বাড়ি থেকে পাটি নিয়া আসতে হইছে।
মধুখালী উপজেলা সদরের বাসিন্দা আছিয়া বেগম (৩৫) জানান, সোমবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ছেলে ইসমাইল মোল্লাকে (১৫) নিয়ে এ হাসপাতালে এসেছি। তিনিও মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি জানান, সুস্থ করে ছেলেকে বাড়ি নিয়ে যেতে পারবো তার জন্য দিন গুনছি। ফরিদপুরের সিভিল সার্জন মো. ছিদ্দীকুর রহমান বলেন, ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতলটি একশ শয্যার। সে হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৯২জনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছেঅ ডেঙ্গু ও অন্য রোগীদের নিয়ে বিপদের মধ্যে আছি। তিনি বলেন, ফরিদপুর ডেঙ্গু পরিস্থিতি চরম আকার ধরান করেছে। তবে ফরিদপুর জেলা কিংবা উপজেলার পঙ্গু প্রতিরোধে কোন কমিটি গঠন করা হয়নি। এজাতীয় কোন কমিটি গঠন করতে হবে এ নির্দেশনাও আমরা পাইনি।
Leave a Reply