1. ajkerfaridpur2020@gmail.com : Monirul Islam Titu : Monirul Islam Titu
  2. jmitsolution24@gmail.com : support :
  3. titunews@gmail.com : Monirul Islam Titu : Monirul Islam Titu
ফরিদপুরে গরমে হাসফাঁস, অতিষ্ট জনজীবন - আজকের ফরিদপুর
শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ০১:৫৩ অপরাহ্ন
নোটিশ বোর্ড :
আজকের ফরিদপুর নিউজ পোর্টালে আপনাদের স্বাগতম । করোনার এই মহামারীকালে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। সচেতনে সুস্থ থাকুন।

ফরিদপুরে গরমে হাসফাঁস, অতিষ্ট জনজীবন

  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪
  • ২৮৫ জন পঠিত
ফরিদপুরে গরমে হাসফাঁস, অতিষ্ট জনজীবন
ফরিদপুরে গরমে হাসফাঁস, অতিষ্ট জনজীবন

স্টাফ রিপোর্টার : ফরিদপুরের উপর দিয়ে তীব্র তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। তাপমাত্রার সর্বোচ্চ পারদ ৩৭ থেকে ৪০.৮ এর মধ্যে ওঠানামা করছে। এর ফলে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে জনজীবন। তীব্র গরমে হাসফাঁস অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। জরুরী প্রয়োজন ছাড়া মানুষ বাড়ির বাইরে বের হচ্ছে না। স্কুল কলেজ বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের ঘর থেকে না বেরতে হলেও সরকারি বেসরকারি চাকুরীজীবীদের প্রতিদিনই জীবন ও জীবিকার কারনে বাড়ি থেকে বের না হয়ে উপায় নেই। শহরের লক্ষীপুর মহল্লার বাসিন্দা সরকারি কর্মচারী আলমগীর হোসেন (৪১) বলেন, গরমের কারনে অফিসে আসা যাওয়ার পথে সমস্যা তো হচ্ছেই।

পাশাপাশি শরীর ঘেমে যাওয়ার জন্য পরনের জামা কাপড় ভিজে চুপসে যাচ্ছে। একদিনের বেশি এ জামা প্যান্ট পড়া সম্ভব হচ্ছে না। গরমে সবচেয়ে সংকটে পড়েছে দিন মজুর, রিক্সা-ইজিবাইক চালক, পথচারী ও ফুটপাতের দোকানদারদের। শহরের জনতা ব্যাংকের মোড়ের দিনমজুর সদরের ভাষাণচর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রহিম (৪৬) এর সাথে কথা হয় বেলা ১১টার দিকে। তিনি বলেন, সকাল সাতটা থেকে তিনি বসে আছেন কাজের জন্য। কিন্তু কোন গৃহস্ত তাকে কাজে নেয়নি। গরমের জন্য কাজ কম। তিনি নবলেন, আজ বাড়ি গিয়া বউ ছোয়াল মাইয়ার মুখে কি তুলে দেব ভাবছি।

শহরের ভাজনডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা রিক্সা চালক শেখ লালন (৩২) বলেন, সকাল ছয়টার দিকে বাড়ি থেকে রিক্সা নিয়ে বের হয়েছি। এখন বাজে দুপুর ১২টা। এই সময়ে একশ টাকাও রোজগার করতে পারি না। গরমের কারনে রাস্তা ফাঁকা লোকজন বের হইতেছে না। তাই ভাড়া নাই। মাছ বিক্রেতা বিপ্লব বিশ্বাস (৫৭) জানান, মাছ কিনে তাড়া তাড়ি বিক্রি করতে না পারলে পচে যাচ্ছে। বাজারে ক্রেতা কম। যারা আসে সাত সকালে কিনে নিয়ে যায়। এরপর ঘন্টার পর ঘন্টা অলস ভাবে বসে থাকতে হয়। ফরিদপুর শহরেরে তিতুমীর বাজারের প্রথন ফটকে ফুটপাতে কাপড়ের দোকান বসিয়ে ব্যবসা করেন ইমার হোসেন (৩৫)।

তিনি বলেন, সারাদিন ফুটপাতে বসে থাকা কষ্ট সাধ্য হয়ে যাচ্ছে। যে ভাবে আগুনের গোলার মত রোদ ওঠে তাতে বেশিক্ষণ টেকা দায়। মাঝে মাঝে বাতাস হলেও তা গরম আগুনের হলকার মত গায়ে বিধে। ফরিদপুর প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্বেক্ষণাগার-এ কর্মরত (বেলন মেকার) মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, এপ্রিলের শুরু থেকেই তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। আবহাওয়ার অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে আগামী আরও কয়েকদিন আবহাওয়ার তামপাত্রার এ প্রবণতা অব্যাহত থাকবে। এ মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পড়েছে গত শনিবার। তাপমাত্র ছিল ৪০.৮।

গত ১ এপ্রিল ফরিদপুরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮.৭, ২ এপ্রিল ৩৭.২, ৩ এপ্রিল ৩৭.৯, ৪ এপ্রিল ৩৬.৩, ৫ এপ্রিল ৩৪.৮, ৬ এপ্রিল ৩৮.৫, ৭ এপ্রিল ৩০.০, ৮ এপ্রিল ৩০.২, ৯ এপ্রিল ৩৬.০, ১০ এপ্রিল ৩৫.৩, ১১ এপ্রিল ৩৭.০, ১২ এপ্রিল ৩৭.০, ১৩ এপ্রিল ৩৭.৭, ১৪ এপ্রিল ৩৭.৫, ১৫ এপ্রিল ৩৮.৭, ১৬ এপ্রিল ৩৯.২, ১৭ এপ্রিল ৩৭.৭, ১৮ এপ্রিল ৩৮.০, ১৯ এপ্রিল ৩৯.২, ২০ এপ্রিল ৪০.৮। গত ২১ এপ্রিল সর্বোচ্চ তামপাত্রা ৩৯’৫ রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া গত ২২ এপ্রিল ৩৯.০০ তামপাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।

ফরিদপুর শহরের চকবাজার এলাকার একটি পাচতলা ভবনের চারতলায় একটি মেস করে বসবাস করেন ১৩ জন শিক্ষার্থী। ওই মেসের নিবাসী মানিক কুন্ডু (২৬) জানান, গরমে জনজীবন অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। হাসফাসঁ অবস্থা। এ গরমের হাত থেকে বাঁচতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা কক্ষের সব দরজা জানালা বন্ধ করে রাখেন। যাতে বাইরে থেকে আগুনের গোলার মত গরম বাতাসের প্রবাহ ভিতরে ঢুকতে না পারে। এতে কিছুটা কাজ হচ্ছে বলে তিনি জানান। নগরকান্দার চরযশোরদী ইউনিয়নের বাস্তুপুটি গ্রামের বাসিন্দা পাট চাষী লক্ষণ চন্দ্র মন্ডল (২৭) জানান, ক্ষেতে গত ২০দিন আগে জমিতে পাট বিজ বপন করা হয়।

পাটগাছগুলি সবেমাত্র তিন থেকে চার ইঞ্চি পরিমাণ হয়েছে। প্রচন্ড রোদের কারনে পাটগাছ গুলি পুড়ে যাচ্ছে। সেচ দিয়েও পাড় পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি বলেন, এক বিঘা জমিতে একবার সেচ দিতে দেড় হাজার টাকা খরচ হয়। সাধারণত জমিতে পাটের জন্য তিনটি সেচ দেওয়া হয়। এবার পাট গাছ বাঁচাতে চার থেকে পাঁচটি সেচ দিতে হবে। এর ফলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচারক রফিকুল ইসলাম জানান, রোদের কারনে পাটে সেচ দিতে হবে। আমরা কৃষকদের সেচ দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।

তিনি বলেন, সরকারি উদ্যোগে সেচ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে আমরা সেচের ব্যবস্থা করবো। উপপরিচারক রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, এললিনোর প্রভাবে সমুদ্রের উপরিভাগের জলের মাপমাত্রার হ্রাসবৃদ্ধির কারনে বিশ্ব পরিমন্ডলে আবহাওয়াগত পরিবর্তনের জন্য আমাদের দেশে আবহাওয়া উষ্ণ হয়ে যাচ্ছে। এটি একটি বৈশিক সমস্যা। ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল চিকিৎসক গণেশ কুমার আগরওয়ালা বলেন, গরমজনিত ডাইরিয়া রোগীর প্রাদুর্ভাব এখনও পরিলক্ষিত হচ্ছে না। তবে যে হারে গড়ম পড়ছে তাতে আগামী তিন-চার দিনের মধ্যে কি হবে বুঝতে পারছি না। গণেশ কুমার আগরওয়ালা বলেন, তবে গরমের কারণে জ্বর, ঠান্ডা ও কশিজনিত সমস্যা নিয়ে বেশ কিছু রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।

 

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ
© পদ্মা বাংলা মিডিয়া হাউজের একটি প্রতিষ্ঠান
Design & Developed By JM IT SOLUTION