বিশেষ প্রতিবেদক :
ফরিদপুরের আড়পাড়ায় মধুমতি নদীর তীর সংলগ্ন দুই ফসলী জমি থেকে মাটি অবৈধ ও অপরিকল্পিতভাবে কেটে ভাটায় নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে বর্ষা মৌসুমে ব্যপক নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ার শংকা প্রকাশ করেছে স্থানীয়রা। আর মধুখালী উপজেলা প্রশাসন বলছে ওই এলাকাটি ফরিদপুরের মধুখালী থানার এবং মাগুরার শ্রীপুর থানার সীমান্তবর্তী হওয়ায় সীমানা জটিলতায় সরাসরি ব্যবস্থা নিতে পারছেনা তারা।
স্থানীয়রা জানান, মধুমতি নদীর তীরবর্তী রাজধরপুর মৌজা কাগজপত্রে শ্রীপুর উপজেলার অন্তর্ভুক্ত হলেও ওই এলাকায় বসবাসকারীরা ভোট প্রদান করে থাকেন ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার আড়পাড়া ইউনিয়নে। ফলে যেকোনো অরপাধ কর্মে মধুখালী ও শ্রীপুর উপজেলার প্রশাসনের মধ্যে চলে টানা হেচড়া, যার সুযোগ নিয়ে থাকে অপরাধিরা।
ঝুকিতে পড়া বাড়ীঘরে বসবাসকারী জবেদা বেগম, সাহেরা আক্তার ও আসিয়া বেগমসহ অন্যান্যরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে একটি মহল নদীর তীরের স্থানীয়দের বসত ভিটা সংলগ্ন জায়গা থেকে অবৈধভাবে দুই ফসলী জমির মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। স্কেবেটর দিয়ে গভীর করে মাটি কেটে নেয়ায় বর্ষা মৌসুমে নদীতে পানি বেড়ে গেলে ব্যপক ভাঙ্গনের শিকায় হওয়ায় শংকায় রয়েছেন তারা। এসব মাটি পাশের একটি ভাটায় নেয়া হচ্ছে বলেও জানান তারা।
স্থানীয়দের দাবী, মাটি কাটার সাথে সংশ্লিষ্টরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের (স্থানীয়দের) কোনো কথাই আমলে নেয়না। আর আব্দুর রউফ মোল্লা জানান, বারবার প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েও মিলছেনা প্রতিকার। ইতিপুর্বে এমন ঘটনার কারণে অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি ভেঙ্গে পড়েছে বিদ্যুতের পিলারও। বর্তমানে মাটি কাটার বিষয়টিও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে দাবী করেন তিনি।
এদিকে মাইসা ব্রিকস এর স্বত্ত্বাধিকারী গোলাম কিবরিয়া বলেন, আমি শ্রীপুরের রাজধরপুর মৌজায় আমার দলিলকৃত জমি থেকে মাটি কেটে ভাটায় ব্যবহার করছি। এখান থেকে অনেকেই মাটি কাটে দাবী করে তিনি বলেন, মাটি কাটলেও বর্ষা মৌসুমে সেই স্থান পলি পড়ে পরের বছর ভরাট হয়ে যাবে। ভুমির শ্রেনী পরিবর্তন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আবেদন করেছি আগামী রোববার (০৪.১২.২০২২) অনুমোদন দেবার কথা রয়েছে।
আর মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, ওই এলাকার মানুষ মধুখালীর ভোটার হলেও ওই জমির মৌজা শ্রীপুর উপজেলায় হওয়ায় সেটি দেখভালের দ্বায়িত্ব শ্রীপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার। তথাপিও যেহেতু ভোটার মধুখালীররা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে, সুতারাং পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন তিনি। এছাড়া ভুমির শ্রেনী পরিবর্তন না করে ফসলী জমির মাটি কেটে নেয়া বেআইনী বলেও জানান তিনি।
স্খানীয়রা মনে করেন, এভাবে চলতে থাকলে ওই স্থান থেকে কয়েকশ মিটার দুরে কামারখালী বাজার, নির্মাণাধীন ফরিদপুর-মাগুরা রেলপথের সেতু (মধুমতি নদীর উপর নির্শাণকাজ চলমান) ও বীর শ্রেষ্ট মুন্সী আব্দুর রউফের মিউজিয়াম ও বাড়ীঘরে যাবার একমাত্র সড়ক, যা ফের ভাঙ্গনের কবলে পড়বে বলে। #
Leave a Reply