স্টাফ রিপোর্টার : গত বুধবার ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার গাজীরটেক ইউনিয়নের শিকদার ডাঙ্গী গ্রামের মধ্যদিয়ে বয়ে যাওয়া পদ্মা নদীর শাখা ভুবেনস্বর নদে যে কুমিরটি গিয়েছিল সেটি অবস্থান পরবির্তন করে আজ সোমবার সকাল থেকে পূর্রে জায়গা থেকে সাত কিলোমিটার ভাটিতে ফরিদপুর সদরের আলীয়াবাদ ইউনিয়নের গজারিয়া সেতুর নিচে দেখা যায়। এর পর এলাকাবাসী গজারিয়া সেতু থেকে ভাটিতে একশ মিটার দূরে সোহরাব মোল্লার বাড়ি পযন্ত নদের অংশে বাশের বেড়া (বানা) দিয়ে আটকে রেখেছে। এলাকাবসী সুত্রে জানা যায় ওখানে আটকা পড়েছে এক জোড়া কুমির। এর একটি বড় অপরটি ছোট।
এখবর বন বিভাগকে দেওয়ার পর তারা জানিয়েছে আজ মঙ্গলবার নদে আটকে রাখা কুমির দুটি উদ্ধার অভিযান করবেন তারা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সোমবার সকাল থেকে দুটি কুমির ওই জায়গায় দেখা যায়। এ সময় ফরিদপুর সদরের আলীয়াবাদ ইউপি সদস্য (আট নম্বর) মকলুকার রহমানের নির্দেশে নদে ওই বেড়া দেওয়া হয়। ফরিদপুর সদর উপজেলা বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা সাইদুর রহমান বলেন, কুমিরটির অবস্থান সনাক্ত ও নদের একশ মিটার অংশে বেড়া দিয়ে আটকে রাখার খবর তারা জানতে পেরেছেন। আগামীকাল মঙ্গলবার বণ্য প্রাণি ব্যবস্থাপনা প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের মৎস্য বিশেষজ্ঞ মো. মফিজুর রহমান চৌধুরী নেতৃত্বে দুটি কুমির উদ্ধার করা।
তিনি বলেন, উদ্ধারের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কুমির দুপি গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাপারি পার্কে নেওয়া হবে নাকি খুলনার করমজল কুমির প্রজনন কেন্দ্রে নেওয়া হবে। তিনি বলেন, এলাকাবাসী যাতে কুমির দুটির কোন ক্ষতি না করে এজন্য বন বিভাগের দুই কর্মীকে ওই জায়গায় মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি ইউপি আলীয়াবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের সাথে কুমির দুটির নিরাপত্তা বিষয়ে দেকভাল করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কুমির দুটি দেখতে শিশু, নারী পুরুষসহ শত শত উৎসুক মানুষ গজারিয়া সেতু সংলগ্ন ভুবনেশ্বর নদের পাড়ে সমবেত হয়েছে। ছোট কুমিরটি ১০/১৫ মিনিট পর এবং বড়টি আধা ঘন্টা এক ঘন্টা পর মাথা উচু করছে।
কুমিরের মাথা দেখা গেলে এলাকাবসীর মধ্যে কৌতুহল আরও বেড়ে যায়। প্রসঙ্গত গত বুধবার বিকেল পাচটার দিকে চরভদ্রাসনের শিকদার ডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা বাচ্চু শেখের স্ত্রী সিমা বেগম প্রথম তার বাড়ীর সামনে নদীর ঘাটে কুমিরটি দেখতে পান। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে ওই স্থান হতে তিনশত মিটার দক্ষিণে লোকমান মাতুব্বরের বাড়ীর সামনে এক সাকোর নীচে অবস্থান নেয় কুমিরটি। এর আগে গত বছর ফরিদপুর সদরের নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নে একটি বড় আকারের পুকুরে মিঠা পানির একটি মেয়ে কুমির আটকে পড়েছিল।
পরে ওই কুমিরটি উদ্ধার করে গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে ছেড়ে দেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা। ভুবনেশ্বর নদটি চরভদ্রাসনের হাজিগঞ্জ বাজার এলাকায় পদ্মা নদী থেকে শুরু হয়ে ২৩ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে সদরপুরের পেয়াজখালী এলাকায় আড়িয়াল খাঁ নদের সাথে গিয়ে মিশেছে। ধারনা করা হচ্ছে এ কুমির দুটি খাবারের সন্ধানে পদ্মা নদী হয়ে চরভদ্রাসনের হাজিগঞ্জ বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া পদ্মা নদী শাখা ভুবনেশ্বর নদে ঢুকে পড়েছে।
Leave a Reply