স্টাফ রিপোর্টার : ফরিদপুরের ভাঙ্গায় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের মোখলেছুর রহমান সুমনের উঠান বৈঠকে হামলা চালিয়ে ২টি গাড়ি, প্রচারকাজে ব্যবহৃত মাইক এবং বেশ কিছু চেয়ার ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের ব্রাহ্মণকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে শনিবার রাত আটটার দিকে। প্রতিপক্ষ চেয়ারম্যান প্রার্থী দোয়াত কলম প্রতীকের কাওছার ভুইয়ার লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগে জানা যায়। এ সময় আক্রমণকারীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এ হামলা চালায় বলে জানা গেছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী এবং ভাঙ্গা থানা সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (১৮ মে) রাত আটটার দিকে ভাঙ্গা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের ব্রাহ্মণকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী মোখলেছুর রহমান সুমনের ঘোড়া প্রতীকের উঠান বৈঠক চলছিল। উঠান বৈঠকের শেষ দিকে দোয়াত কলম প্রতীকের অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী কাওছার ভূইয়ার সমর্থক ইয়াকুব মিয়া, আক্কাস ও তুহিনের নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক লোক ঐ জায়গায় অতর্কিত হামলা চালায়। তারা এ সময় প্রচার কাজে ব্যবহৃত মাইক, চেয়ার ও ২টি গাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। ঘটনার পরপর মোকলেছুর রহমানের নেতৃত্বে তার সমর্থকরা হামলার প্রতিবাদে পুকুরিয়া বাস স্টান্ডে একটি বিক্ষোভ মিছিল করে।
এদিকে উঠান বৈঠকে হামলার খবর পেয়ে ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহীকর্মকর্তা (ইউএনও) বিএম কুদরত এ খোদা এবং ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন আল রশিদের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী মোখলেছুর রহমান বলেন, আমার উঠান বৈঠকে অতর্কিত হামলা হয়েছে। ইয়াকুব মোল্লা ও আক্কাস এর নেতৃত্বে নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয়। ওরা আমার গাড়ি ভাঙচুর করেছে। প্রচার প্রচার মাইক ভেঙ্গেছে। আমার সামনে দুইজন মুরুব্বির উপর আক্রমণ করা হয়েছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই। ভাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুর রহমান মিরন বলেন, আমাদের উঠোন বৈঠক শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ আগেই এই হামলার ঘটনা ঘটে। ওরা আমাদের গাড়ি ভাঙচুর করেছে। অতর্কিত হামলায় সবাই দিশেহারা হয়ে ছুটোছুটি করেছে। আমি এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
অভিযোগ অস্বীকার করে দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থী কাওছার ভুইয়া বলেন, এ অভিযোগ ডাহা মিথ্যা। আমরা কোন সমর্থক ওই সময় ওই এলাকায় ছিল না, আমার কোন মিটিংও সেখানে ছিল না। ভোটারদের বিভ্রান্ত করার জন্য প্রতিপক্ষ আমার সমর্থকদের জড়িয়ে এ কথা বলছে। ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুন আল রশিদ জানান, চেয়ারম্যান প্রার্থী মোখলেছুর রহমান সুমনের উঠান বৈঠকে প্রতিপক্ষ দোয়াত কলম প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থক ইয়াকুব মিয়া, আক্কাস ও তুহিনের নেতৃত্বে ৩০-৪০ জন লোক হামলা চালিয়েছে বলে জানতে পেরেছি। পুলিশ দ্রæত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে।
ওসি আরও বলেন, এ ঘটনায় মোতালেব মাতুব্বর নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে রবিবার সকালে অজ্ঞাত ৫০-১০০ জনকে আসামি করে ভাঙ্গা তানায় একটি মামলাদায়ের করেছেন। তিনি বলেন, দ্রæততম সময়ের মধ্যে আক্রমণকারীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে। ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিএম কুদরত এ খুদা বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। ঘটনা যেই ঘটিয়ে থাকুক না কেন, কেউই আইনের উর্ধ্বে নয়। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, ভাঙ্গায় অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু উপজেলা নির্বাচন আয়োজনের জন্য যাবতীয় সব কাজ করা হবে।
Leave a Reply