মনির মোল্যা, সালথা : ফরিদপুরের সালথায় নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সপ্তম শেণির এক ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মাদরাসার সুপারের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সুপারকে মাদরাসার ভেতরে কয়েকঘন্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন স্থানীয় জনতা ও অভিভাবকরা। খরব পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই সুপারকে উদ্ধার করেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। সোমবার (৬ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের যদুনন্দী বাজারে অবস্থিত জগজ ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত সুপারের নাম ইব্রাহিম হোসাইন। তিনি টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বাসুরিয়া গিমাডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা।
ভুক্তভোগী ছাত্রী অভিযোগ করে জানায়, সুপার হুজুর বছরখানেক ধরে নানা সুবিধা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আমাকের কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। সকালে তিনি তার কক্ষে ডেকে নিয়ে একটি অভিযোগের কথা বলে আমাকে ভয় দেখিয়ে আবারও কুপ্রস্তাব দেন। পরে আমি তার ভয়ে দ্রুত ক্লাস রুমে চলে যাই। মাদরাসার শ্রেণি শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন বলেন, ওই ছাত্রী ক্লাস রুমে কাঁদছিল। এ সময় তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে বিস্তারিত ঘটনাটি আমাকে জানায়। পরে আমি বিষয়টি মাদরাসা পরিচালনা পর্ষদের এক সদস্যকে অবগত করি।
মাদরাসা পরিচালনা পর্ষদ কমিটির অভিভাবক সদস্য মো. কাইয়ুম মোল্যা বলেন, সকাল ১০টার দিকে মাদরাসার শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন ফোন করে বিষয়টি আমাকে জানায়। পরে আমি ঘটনাস্থলে ভুক্তভোগী ছাত্রীর মুখ থেকে সব কথা শুনি। এ সময় মাদরাসার চারপাশে উত্তেজিত জনতা ও অভিভাবকরা সুপারকে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে পুলিশ খবর দেই। তিনি আরও বলেন, সুপারের বয়স ৪৫ বছর পার হলেও সে এখনো বিয়ে করেনি। মাদরাসার শ্রেণিকক্ষ দখল করে রাতে থাকেন। তার বাসা-বাড়ি সব কাজ মাদরাসার ভেতরেই করেন। এর আগেও একাধিকবার সুপার এমন ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী সালথা থানার এসআই আব্দুল হালিম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিত স্বভাবিক করা হয়। ওই ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার বিষয়ে তেমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। মোবাইলে বিভিন্ন ধরণের ছবি পোস্ট করায় তাকে ডেকে নিয়ে রাগারাগি করেন সুপার। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে কুপ্রস্তবের অভিযোগ তোলে। তবে এর আগে সুপার ওই ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দিয়েছে বলে শুনেছি। অভিযুক্ত মাদরাসার সুপার ইব্রাহিম হোসাইন বলেন, প্রবাসী যুবকের সাথে ওই ছাত্রীর প্রেম সম্পর্ক রয়েছে। বিষয়টি ওই প্রবাসীর স্ত্রী আমাকে একাধিকবার জানিয়েছেন। তাই আজকে ওই ছাত্রীকে ডেকে রাগারাগি করেছি। কিন্তু আমাদের খন্ডকালিন শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন বিষয়টি বড় করে এমন পরিবেশ তৈরি করেছে।
সালথা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিনয় কুমার চাকী বলেন, খবর পেয়ে মাদরাসায় গিয়েছিলাম। এ সময় এক ছাত্রী একটি অভিযোগ করেছে। সেটা তদন্ত করা হবে। সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিচুর রহমান বালি বলেন, খবর পেয়ে শিক্ষা অফিসারকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। তিনি বিস্তারিত জেনে এসেছেন। এ ঘটনায় আগামীকাল একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত করে সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply